শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পাকুয়াখালী ট্রাজেডি: ২৩ বছরেও বিচার পায়নি নিহতদের পরিবার

আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৩৬

৯ সেপ্টেম্বর পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস। ১৯৯৬ সালে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীর গহীন অরণ্যে শান্তিবাহিনীর হাতে ৩৫জন বাঙালি কাঠুরিয়া প্রাণ হারান। এর ২৩ বছর পার হলেও এ হত্যাকাণ্ডের এখনো বিচার পায়নি স্বজনেরা। এই হত্যাকাণ্ডের স্মরণে এখনো কেঁদে উঠে লংগদু উপজেলার মানুষ।

পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত বাঙালিরা এই দিনটি শোকাবহ দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন। তারা ৩৫ জন কাঠুরিয়ার বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ভুলতে পারছেন না। তাই এই দিনে তারা ওই কাঠুরিয়াদের গণকবর জিয়ারত, প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন, সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে আসছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় লংগদুর ৩৫জন কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ডসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনসহ ৯ দফা দাবী করে আজ সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন রাঙ্গামাটি-এর জেলা শাখা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি মো. শাহজাহান, সহ সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক, অর্থ সম্পাদক মো. মতিয়ার রহমান বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শাহ জাহানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় নেতৃবৃন্দরা বলেন, তৎকালীন লংগদুর ৩৫ জন কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবং এই কমিটি ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। পুনর্বাসন করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে। তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে কোন দায়িত্ব নেয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। তারা আজ শিক্ষা-দীক্ষা-হীনভাবে অতি কষ্টের সাথে দিন যাপন করছে।

নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, ১৯৯৭ সালে শান্তিবাহিনী সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে অস্ত্র জমা দিলেও তারা আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ পাহাড়ে অস্ত্রবাজী এবং চাঁদাবাজি রয়ে গেছে আগের মতোই। পাহাড়ে সংগঠিত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখে বুঝা যায় ধীরে ধীরে তারা অস্ত্রের মজুদ বাড়িয়ে আরো শক্তিশালী হচ্ছে। তাই পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরুর দাবী জানান। অন্যথায় পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনদিনই সফল হবে না।

উল্লেখ্য, লংগদুরে ৩৫জন কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ডসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের আশায় বুক বেধে আছে পাহাড়ে স্বজনহারা এই লোকজন। তারা এখনো আশা করছে একদিন এইসব খুনিদের সুষ্ঠু বিচার হবে এবং সরকারের দেয়া পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হবে এই আশায়।

ইত্তেফাক/এসএস