হবিগঞ্জবাসীর বহু কাঙ্খিত পুরোনো খোয়াই নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরবাসী নদীটি উদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ আন্দোলন করেছেন। বিভিন্ন সময় জাতীয় পর্যায়ের পরিবেশ আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দও এসে সংহতি প্রকাশ করেছেন। অবশেষে জেলা প্রশাসন নদীটির অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ব্যাপারে রবিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান, পরিবেশ আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভায় জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ জানান, নদী বা খাল বন্দোবস্ত দেয়ার কোন বিধান নেই। অতএব পুরাতন খোয়াই নদীর সম্পূর্ণ অংশ থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড় দেয়া হবে না। পুরাতন খোয়াই নদী উচ্ছেদ কার্যক্রমকে সফলভাবে সম্পন্ন করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর পরিকল্পনাধীন খোয়াই রিভার প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নদী পুনঃখনন, তীর রক্ষা ও বনায়নের মাধ্যমে নান্দনিক রূপ দেয়া হবে। পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়েও সরকারি জমি থেকে সব অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, মাছুলিয়া পয়েন্ট থেকে এসএ রেকর্ড অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হবে। সে অনুযায়ী যারাই অবৈধ দখলকারী তাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ জেলা শহরকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে ১৯৭৭-৭৮ সালে মাছুলিয়া থেকে কামড়াপুর পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। এরপর থেকে নদীর পুরোনো অংশটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময় নানা পেশার মানুষ নদীর পুরোনো অংশটি দখলে নিতে থাকেন। এক সময় নদী অস্তিত্ব হারিয়ে সেটি কোথাও খাল, আবার কোথাও ড্রেনে পরিণত হয়। এদিকে উচ্ছেদের খবর পেয়ে অনেক স্থানে নিজেরাই স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন দখলদাররা।
ইত্তেফাক/আরকেজি