নিখোঁজ হবার তৃতীয় দিনে এনজিও ‘উদ্দীপন’ বগুড়া’র কাহালু উপজেলা শাখার ফাস্ট প্রোগ্রাম অফিসার এস.এম.শাহারিয়ার (৪৫)গলিত উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে কাহালু উপজেলার দামাই গ্রামের রাস্তার পশ্চিম দিকে আলহাজ্ব মেলুর বাড়ির একটি কক্ষের মধ্যে থেকে কাহালু থানার পুলিশ শাহারিয়ার লাশ উদ্ধার করে।
বাড়ির মালিক মেলু জানান, ওই বাড়িতে আমজাদ ও তার ছেলে রাজু ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। তবে আমজাদের বাড়ি কোথায় তা তিনি বলতে পারবেন না। তবে ঘটনার পর থেকে আমজাদ ও তার ছেলে রাজুসহ পুরো পরিবার বাড়িতে তালা দিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গ্রামের লোকজন জানায় শাহরিয়ার নিখোঁজ হবার পরদিন থেকেই ওই বাড়ির প্রধান ফটকে তারা তালা ঝুলানো অবস্থায় দেখতে পায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রামে লোকজন ওই বাড়ির পাশ দিয়ে যাবার সময় রাস্তার পাশের জানালার ভেতর দিয়ে দুর্গন্ধ বের হতে দেখে কিছু উৎসুক জনতা জানালার ফাক দিয়ে বস্তা দিয়ে ঢাকা মানুষের লাশ দেখতে পায়। এরপর ঘটনাটি কাহালু থানায় জানানো হলে কাহালু থানার ওসি (তদন্ত) মাহমুদ হাসান, সিনিয়র এস.আই ডেভিড হিমাদ্রী বর্মা ঘটনাস্থলে এসে বাড়ির প্রধান গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে চট ও প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঢাকা শাহারিয়ার দুর্গন্ধময় গলিত লাশ উদ্ধার করে বগুড়া মর্গে পাঠিয়ে দেয়। তার পরনের সার্ট, ফুলপ্যান্ট ও পায়ের স্যান্ডেল দেখে লাশ সনাক্ত করে উদ্দীপন অফিসের লোকজন।
আরও পড়ুন : ফাস্ট প্রোগ্রাম অফিসার
শাহরিয়ারের লাশের পাশে এসজি’ওর কাগজপত্র সহ একটি ব্যাগ ও ছোট একটি হাসুয়া যায়। তাকে ওই বাড়িতেই মাথায় আঘাত করে থেতলিয়ে দিয়ে হত্যা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে ওই বাড়িতেও উদ্দীপন এনজিওর গ্রাহক ছিল। কিস্তির তোলা টাকা ও মোটর সাইকেল আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্য পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ির মধ্যে নিয়ে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রোগ্রাম অফিসার শাহারিয়া গত মঙ্গলবার সকালে মোটর সাইকেল নিয়ে কাহালু উপজেলার নারহট্ট ইউনিয়নের শিকড় গ্রামে কিস্তি তুলতে যায়। এরপর দযপুরে দরগাহাট বাজারের দিকে আসার পথে নিখোঁজ হয়। দুপুর ২টার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে ওই এনজি’র পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাতেই কাহালু থানায় জিডি করে। শাহারিয়া ওরফে ছমিরের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলা কাঁচেরকোন ইউনিয়নের হামদামপুর গ্রামে। তার পিতার নাম মনির উদ্দিন। তিনি মাত্র ২ মাস হলো উদ্দীপন কাহালু অফিসে এসে যোগদান করেন।
শাহারিয়ার পারিবারিক জীবনে স্ত্রীসহ ৮ বছর বয়সের মেয়ে ও ৪ বছর বয়সের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এ রিপোর্ট লেখার সময় থানায় কোন মামলা হয়নি। এদিকে ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাগণ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।
ইত্তেফাক/কেআই