বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মিঠাপুকুরে এক বৃদ্ধকে রাতভর নির্যাতন করেছে স্থানীয় বখাটেরা

আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৪৫

রংপুরের মিঠাপুকুরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ এনে ৬০বছরের এক বৃদ্ধকে হাত-পা বেঁধে রাতভর নির্যাতন করেছে স্থানীয় বখাটেরা। ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধের নাম ফেলু। তাকে রাতভর বেধড়ক মারপিট এবং গোপন অঙ্গে বাই সাইকেলের স্পোক ঢুকিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, মিঠাপুকুর উপজেলার লতীবপুর ইউনিয়নের জায়গীর নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ১৪ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রীকে সোমবার দুপুরে তার বাড়ির পাশে একটি কলাক্ষেতে ডেকে নেয় একই গ্রামের প্রতিবেশী দাদা ফেলু মিয়া। সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ফেলু। এরই জের ধরে বুধবার রাতে ফেলু মিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে স্থানীয় ১০-১২ জন বখাটে যুবক রাতভর ফিল্ম স্টাইলে নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর আহত হলে বখাটেরা তাকে রেখে পালিয়ে যায়। 

পরে স্থানীয় লোকজনরা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমান তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে রংপুর পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারের নির্দেশে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক ওই বৃদ্ধকে উলঙ্গ করে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। কয়েকজন আবার পেছন দিকে বারবার লাথি মারছে। মাঝে মাঝে বাইসাইকেলের স্পোক বৃদ্ধের লিঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে রাতভর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন চালানো হচ্ছে! নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নুর মোহাম্মদ আরিফ জানান, ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা-মা ঢাকায় থাকেন। এ ঘটনায় শিশুটির ফুফু রাহেনা বেগম বাদী হয়ে বৃদ্ধ ফেলু মিয়ার বিরদ্ধে ধর্ষণে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার নম্বর- ৪১।

অপরদিকে, অভিযুক্ত ফেলু মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া বাদী হয়ে নির্যাতনের অভিযোগে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার নম্বর-৪৩।

আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে তুলার গোডাউনে আগুন

মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাফর আলী বিশ্বাস বলেন, 'এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফেলু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে, অভিযুক্ত ফেলু মিয়ার ছেলে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে, তাদের গ্রেফতারে জোরালো অভিযান চালানো হচ্ছে।

ইত্তেফাক/নূহু