শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ওয়ার্ড কাউন্সিল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত ১

আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:৫৩

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যায় দেবগ্রাম ইউনিয়নের দেবগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় মো. রেজাউল করিম আবু (৩৫) নামের একজন গুরুত্বর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এছাড়াও উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। নিহত রেজাউল করিম আবু দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের জলিল মুন্সির পাড়া এলাকার মো. মোবারক মোল্ল্যার ছেলে।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম ও সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আতর আলী সরদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে আতর আলী সরদারের ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাবলু (৪২), আ. সালাম বেপারী (৫৫), আ. সাত্তার খান (৩০), টোকন সরদার (২৮), গাজী সরদার (৩০), আবু ডাক্তার (৩৫), নিজাম শেখ (৩৫), রহমান সরদার (৪৫), আলো মোল্লার (৩৮) নাম জানা গেছে। সংঘর্ষের পর আহতদের গোয়ালন্দ হাসপাতালে আনা হয়। বাকিদের অন্যান্য স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং কয়েকজন এখনো আতঙ্কে এলাকায় রয়ে গেছে বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হক জানান, সোমবার বিকালে দেবগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল স্থানীয় দেবগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছিল। প্রথম অধিবেশন শেষে শুরু হয় কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ পর্ব। ভোট গ্রহণ স্থলে উপস্থিত থাকা নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলামের ছেলে বকুল ও সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আতর আলী সরদারের ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাবলুর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে পরবর্তীতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোট গ্রহণ শেষে হাফিজুল চেয়ারম্যানের সমর্থকরা আতর চেয়ারম্যানের বাজারে আসলে সেখানে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় হাফিজুলের সমর্থকরা আতর চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলার খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। 

এ বিষয়ে আতর চেয়ারম্যানের (সাবেক) ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাবলু চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, কাউন্সিল স্থলে হাফিজুল চেয়ারম্যান সন্ত্রাসীদের জড়ো করে কাউন্সিলকে প্রভাবিত করছিল। এর প্রতিবাদ করায় তারা আমার উপর চড়াও হয়। পরবর্তীতে সংগঠিত হয়ে আমাদের লোকজন ও বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে জখম ও ভাংচুর করে।

ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামীলীগের কাউন্সিল হলেও যুবলীগ নেতা বাবলু সেখানে জোরপূর্বক অবস্থান করে কাউন্সিলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল। এ নিয়ে সামান্য বাগবিতণ্ডা হলেও পরবর্তীতে ওরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে আমার লোকজনের উপর হামলা চালায়। চরমপন্থিদের অবস্থানের অভিযোগ সঠিক নয়। 

এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, হামলার ঘটনা শুনে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি