শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

প্রাইভেট শেষে বাসায় ফেরা হলো না রিফাতের

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৯, ২২:৩৪

প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে প্রাইভেট পড়তে যায় ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রিফাত (১০)। প্রাইভেট শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হয় সে। পরে তার মরদেহ ফেলে দেয়া হয় বাড়ির পেছনের একটি ডোবার কচুরিপানায়।

শনিবার রাতে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার সাতরা চম্পকনগর পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিফাত স্থানীয় নর্থসাউথ চাইল্ড একাডেমির ছাত্র। এদিকে এ ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যায় নিহত রিফাতের চাচা মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুন: সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতরা চম্পকনগর এলাকার সৌদি প্রবাসী আলমগীর হোসেনের বড় ছেলে মেহেদী হাসান রিফাত। সে প্রায় একমাস যাবত প্রতিবেশী বিউটি আক্তারের কাছে সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ে আসছিল। প্রতিদিনের মতো শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রিফাত সেখানে প্রাইভেট পড়তে যায়। পরে বিউটি আক্তার রাত সোয়া ৮টার দিকে রিফাতকে তার বাড়ির নিকটে একটি মোড়ে পৌঁছে দেয়। কিন্তু রাতে প্রাইভেট থেকে দীর্ঘসময় পর্যন্ত রিফাত বাসায় না ফেরায় তার মা জেসমিন আক্তারসহ স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিউটি আক্তারকে ফোন করা হলে সে জানায়, রিফাত সোয়া ৮টার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে গেছে। এসময় বাড়ির আশপাশে রিফাতকে খোঁজ করতে থাকে পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে তারা বাড়ির পেছনের একটি ডোবায় কচুরিপানার মাঝে শিশু রিফাতের দেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রিফাতের প্রাইভেট শিক্ষিকা বিউটি আক্তার জানান, শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রিফাত আমার বাসায় পড়তে আসে। রাত ৮টার দিকে আমি তাকে তার বাড়ির সন্নিকটের মোড়ে এগিয়ে দিয়ে আসি। এরপর কিভাবে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা জানি না।’

নিহত রিফাতের মা জেসমিন আক্তার জানান, ‘আমার ছেলে রিফাতকে প্রতিবেশী রিংকু নামে একটি মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেট পড়াত। এই সুবাদে রিংকু এবং তার ভাই হৃদয় আমার ঘরে প্রায়সময় আসা-যাওয়া করতো। প্রায় দেড়মাস আগে আমার ঘর থেকে স্বর্ণালংকারসহ মালামাল চুরি হয়ে যায়। এ নিয়ে রিংকুকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ধারণা করছি সে ও তার ভাই হৃদয় পূর্ব  পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।’

এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল হক বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডের বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। এ ঘটনায় নিহত রিফাতের চাচা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। মামলাটি তদন্তাধীন আছে, তাই এর বেশী কিছু বলা যাচ্ছে না।’

ইত্তেফাক/এএএম