শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জলবায়ু সুরক্ষায় সোচ্চার গুগল কর্মীরা

আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:১৪

গুগলের কর্মীরা তাদের গ্রাহকের পাশাপাশি পরিবেশ ও জলবায়ু সুরক্ষায় সোচ্চার। কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুগল জলবায়ু সুরক্ষার বিপক্ষে প্রচার চালাচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। জলবায়ু পরিবর্তন কল্পকাহিনি বলে প্রচার চালাতে একদল থিংক ট্যাংকের পেছনে অর্থ ঢেলেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি গুগলের কর্মীরা মানতে পারছেন না। তারা গুগলের কাছে এ ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করেন না বলে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। ঐ চিঠিতে জলবায়ু সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে গুগল কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

গুগলের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা রুথ পোরাট বরাবর লেখা ঐ খোলা চিঠিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুগলের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ঐ চিঠিতে গুগলের ১ হাজার ১৩৭ কর্মী সই করেছেন। চিঠিতে বিশ্ব জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলার গুরুত্ব ও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিপদের কথা তুলে ধরা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘গুগলের কর্মী হিসেবে আমরা গ্রাহককে আমার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করি। গুগলেরও তা-ই করা উচিত। বৈশ্বিক ইন্টারনেট কোম্পানি হিসেবে গুগলকে এটা স্বীকার করে নিতে হবে যে, জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রভাবে সৃষ্ট বোঝা এখন অনেকেই বয়ে বেড়াচ্ছে।’

চিঠিতে কর্মীরা গুগলের জন্য সামনে এগিয়ে যেতে ‘চার শূন্য’ লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসারণ শূন্য করে ফেলা, জৈব জ্বালানি আহরণে সক্ষম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শূন্য চুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অস্বীকারকারী থিংক ট্যাংক, রাজনীতিবিদ ও লবিস্টের সঙ্গে চুক্তি না করা বা তহবিল না জোগানো, জলবায়ু বিপর্যয়ের শিকার উদ্বাস্তুদের কারাদণ্ড, নজরদারি, স্থানান্তর, শরণার্থী বা সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা শূন্যে নামিয়ে আনা।

গুগল কর্মীদের লেখা চিঠিতে আমাজনের কর্মীদের লেখা একই রকম একটি চিঠির উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ চিঠিতেও জলবায়ু বিপর্যয়ের শিকার মানুষের দুর্দশার চিত্র উঠে এসেছে। চিঠিতে মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরতে ভারত ও মোজাম্বিকের বন্যা, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের উপকূলীয় মানুষের উদ্বাস্তু হওয়া, আফ্রিকার কূপ পানিশূন্য হওয়া, উত্তর আমেরিকার দাবানলের মতো ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে পেন্টাগনের সঙ্গে চুক্তি থেকে সরে আসতে গুগলের কর্মীরা কর্মবিরতি পর্যন্ত পালন করেছিলেন। গুগলের একসময়ের স্লোগান ছিল ‘ডোন্ট বি ইভিল’। প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মীই এ মন্ত্র মনে ধারণ করেন। প্রাণঘাতী উদ্দেশ্যে ব্যবহার হতে পারে, এমন প্রযুক্তি বা সেবা উদ্ভাবনের পক্ষে নন অনেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনের এমনই একটি প্রকল্প নিয়ে নাখোশ ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির একদল কর্মী। তাদের আশঙ্কা, পেন্টাগন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে, তা প্রাণঘাতী হতে পারে। তারা এই প্রকল্পে যুক্ত থাকতে চান না। কর্মীদের এ অসন্তোষের মুখে পেন্টাগনের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলকে।