হংকংয়ে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের ধাওয়ায় একটি পার্কিং লটের তৃতীয়তলা থেকে পড়ে যাওয়া এক ছাত্রের মৃত্যুর পর সেখানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ আরো জোরদার হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার সকালে ২২ বছরের চাউ টিএসজেড-লক নামের ঐ ছাত্রের মৃত্যু হয়। তিনি হংকং ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (ইউএসটি) শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত সোমবার তিনি পার্কিং লটের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর সোমবার ভোরে অচেতন অবস্থায় চাউকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। গাড়ি পার্কিং লটের ভিতর থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বিক্ষোভকারীরা ঐ ভবন থেকে ইট-পাথর ছুঁড়লে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সেখানে টিয়্যার গ্যাস নিক্ষেপ করেছিল। চাউ কীভাবে আহত হয়েছে সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে তিনি পাঁচ মাস ধরে চলা বিক্ষোভে নিয়মিত অংশ নিচ্ছিলেন।
আহত চাউকে যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সেখানে সপ্তাহজুড়েই বিক্ষোভকারীদের ভিড় দেখা গেছে। তারা চাউয়ের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছে। কেউ কেউ হাসপাতাল গেটে ফুল রেখে গেছেন। এক তোড়া ফুলের সঙ্গে লেখা ছিল, ‘শিগগির জেগে ওঠো। মনে রেখ আমাদের লেগকোর নিচে আবারও দেখা করতে হবে। লেগকো বলতে তিনি হংকংয়ের আইন পরিষদকে বুঝিয়েছেন। অন্য একটিতে লেখা ছিল, ‘জীবন থেকে তোমাকে আরো অনেক অভিজ্ঞতা নিতে হবে।’ চাউয়ের মৃত্যু হংকংজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ঢেউ আরো জোরদার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের শক্তি প্রয়োগ নিয়ে যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে তাতে আরো তেল পড়বে।
এদিকে হংকংয়ে বেইজিংপন্থি এক আইনপ্রণেতা ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর বিক্ষোভকারীদের ‘ডাকাত’ হিসেবে অভিহিত করেছে চীন। চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের হংকং ও ম্যাকাওবিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র জু লুয়িংয়ের বরাত দিয়ে সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, এ হামলা কেবলমাত্র মারাত্মক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নয় এটি একটি নির্বাচনী সহিংসতাও।
চীনের মূলভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে গত জুন মাসে হংকংয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। টানা আন্দোলনের মুখে ঐ বিল প্রথমে স্থগিত এবং পরে বাতিল ঘোষণা করা হলেও আন্দোলন থামেনি। বরং গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা এখন হংকংয়ের চীনপন্থি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। বৃহত্তর গণতান্ত্রিক মুক্তি এবং রাজনৈতিক জবাবদিহিতাও চাইছে তারা।
ইত্তেফাক/এসআর