হংকংয়ে গতকাল দফায় দফায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। একটি ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া তিরে বিদ্ধ হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। এই প্রথম এই ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া গেল। কর্তৃপক্ষ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
গত পাঁচ মাসের বেশি সময়ের আন্দোলনে হংকংয়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর পরও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। শনিবার রাস্তায় সেনাবাহিনী দেখা গেছে। কিন্তু তার পরও গতকাল বিক্ষোভ হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে, ইউনিভার্সিটিগুলোতে মুখোশ পরা অবস্থায় তির হাতে অনেককে দেখা গেছে। গতকাল বিক্ষোভের মূল কেন্দ্র ছিল শহরের পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি। সেখানে বিক্ষোভ দমনে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীরা হারবার টানেলের কাছের একটি ফুটওভারব্রিজে আগুন ধরিয়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই আগুনে ছোটো ছোটো বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এক বিবৃতিতে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনিভার্সিটি বিক্ষোভের মাধ্যমে সহিংসতার স্থান নয়, এটা জ্ঞান অর্জন ও মেধাবীদের স্থান। পুলিশ জানিয়েছে, তিরে আহত পুলিশ কর্মকর্তা ইউনিভার্সিটির কাছেই দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত সপ্তাহে হংকংয়ে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। গত সোমবার এক পুলিশ কর্মকর্তা আন্দোলনরত এক কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সহিংসতা আরো বেড়ে যায়। সেদিনই বিক্ষোভকারীরা সরকারের এক সমর্থকের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রথমদিকে পুলিশ বিক্ষোভে হস্তক্ষেপ না করলেও ধীরে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠতে শুরু করে। আর পুলিশও হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। পুলিশ বিক্ষোভ দমনে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। এমনকি গুলিও ছোড়ে। এতে কয়েক জন বিক্ষোভকারীর প্রাণ যায়।
হংকংয়ে প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। কিন্তু সেই দাবি মেনে নিলেও বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন বন্ধ করেননি। বর্তমানে এই বিক্ষোভ স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। অচল হয়ে পড়েছে চীনের শাসনে চলা শহরটি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা এখানে উপার্জনের জন্য আসেন, তাদের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশরা হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করে। সেই ব্রিটিশ প্রশাসন জানায়, হংকং চীনের অংশ হলেও এখানে সায়ত্তশাসন বজায় থাকবে। মূল ভূখণ্ডের নাগরিকের থেকে হংকংয়ের বাসিন্দারা অনেক বেশি স্বাধীনভাবে থাকেন।
ইত্তেফাক/এসআর