শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে উত্তাল উত্তর-পূর্ব ভারত

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৩:০৬

লোকসভায় পাশ হওয়া নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মঙ্গলবার ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এ বিলের বিরোধিতা করে বেশ কিছু সংগঠনের আহ্বানে অঞ্চলটিতে বনধ বা ধর্মঘট পালিত হয়েছে।

সোমবার লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়। এর প্রতিবাদে আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা, এই ছয় রাজ্যে মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত, টানা ১১ঘণ্টা একজোটে বনধের ডাক দেয় নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো)। ছাত্র সংগঠনগুলোর ডাকা বনধ কঠোরভাবে পালিত হয়েছে। রাজ্যগুলোর বহু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় মানুষজনের দেখা পাওয়া যায়নি। কোথাও কোথাও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে নিজেদের ক্ষোভের জানান দেন আন্দোলনকারীরা। ত্রিপুরায় সড়ক এমনকি রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভে অংশ নেয় মানুষ। সড়ক পথ, রেল পথ বন্ধ ছিল, সব মিলিয়ে অচল ছিল ত্রিপুরা। মণিপুর, অরুণাচলেও রাজপথে নামে বহু মানুষ।

বিলটির প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেয় নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নসহ একাধিক ছাত্র সংগঠন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আসামের ডিব্রুগড়, জোড়হাটের রাজপথে নামে বিক্ষুব্ধ জনতা। জোরহাট, বঙ্গাইগাঁওয়ে বিক্ষোভ থেকে এ বিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে আন্দোলনকারীরা। অস্থিরতার আশঙ্কায় আসামে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যের দুই জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ ৪ সেনা কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

অসম রেলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিক্ষোভের জেরে একাধিক জায়গায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। কামরূপ জেলার রঙ্গিয়ায় নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের ডিআরএমের দফতরও ঘেরাও করা হয় বলে জানান তিনি। আন্দোলনের জেরে গুয়াহাটিতে সমস্ত সরকারি অফিস বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজও। আন্দোলনের জেরে ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। গুয়াহাটিতে বিধানভবন এবং সেক্রেট্যারিয়ট ভবনের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে একদল আন্দোলনকারী। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও রয়টার্সের।

সোমবার মধ্যরাতে লোকসভার অনুমোদন পায় ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্টমেন্ট) বিল, ২০১৯’ শীর্ষক এ বিতর্কিত বিল। ৩১১-৮০ ভোটে পাশ হয় বিলটি। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় এটি উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

ইত্তেফাক/এসি