শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ, নতুন প্রশ্নের জন্ম

আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:০৯

চলতি বছরের জুলাইয়ের পর গত ২৯ ডিসেম্বর রবিবার ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। রাশিয়ায় একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র তথ্য দিয়ে সহায়তা করায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে ফোন দিয়েছিলেন। তবে এই ফোনালাপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লুকোচুরি নানান প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। খবর সিএনএন’র

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে এমন তথ্য দিয়ে মার্কিন একটি গোয়েন্দা সংস্থা রাশিয়াকে সহায়তা করে। এই তথ্যের জেরে দুই রাশিয়ান নাগরিককে আটক করে। যারা বড় সমাবেশে হামলার পরিকল্পনা করছিল। এ প্রেক্ষিতে রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ফোন করেন পুতিন। কথোপকথনের ব্যাপারে রাশিয়া এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দিতে পুতিন ফোন করেছিলেন। এ বিষয়ে আর বিস্তারিত না জানালেও বিবৃতির ব্যাপারে প্রথমে মুখ খুলেনি ট্রাম্প প্রশাসন। কেবল উল্লেখ করেছে রাষ্ট্র প্রধান দ্বয় দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলেছেন। 

রাশিয়ার বিবৃতির ২৪ ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্র এই ফোনালাপের বিষয়ে স্বল্প পরিসরে তথ্য প্রকাশ করে। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন। এর আগে দুই রাষ্ট্র প্রধানের কথোপকথন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের ফোন আলাপ বিষয়ে মুখে কুলুপ নানা প্রশ্নে জন্ম দিচ্ছে। 

কেননা অভিযোগ রয়েছে ২০১৬ সালের নির্বাচনে জিততে রাশিয়ার সহায়তা নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাছাড়া ট্রাম্প বরাবরই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নের উপর জোর দিয়ে বিবৃতি দেন। পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের মুখোমুখি কথোপকথনের ব্যাপারেও ট্রাম্প কড়াকড়ি আরোপ করেন। ২০১৮ সালে জার্মানিতে পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প তার অনুবাদকের নোট খাতা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। সেখানে ডিনারের সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে কেউ ছিলো না যদিও পুতিনের সঙ্গে কর্মকতা ছিলেন।

আরও পড়ুন: আগামী বছর থেকে জেএসসি-জেডিসিতে থাকছে না জিপিএ-৫

তাছাড়া একই বছর ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প পুতিন কোন অফিসিয়াল কর্মকর্তা ছাড়াই কথা বলেন। সর্বশেষ পুতিনের সঙ্গে কথোপকথনের ২৪ ঘণ্টা পর ট্রাম্প প্রশাসন বিবৃতি প্রকাশ করলো যাতে তাদের কথোপকথন বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই বলা হয়নি। প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের এমন লুকোচুরি চলছেই। প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে এমন সম্পর্কের মাধ্যমে ট্রাম্প আসলে কী অর্জন করতে যাচ্ছেন? 

এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুধু পুতিন নয় সকল দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প গোপনীয়তা অবলম্বন করেন। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের বিশ্বস্ত কর্মকর্তা ছাড়া কাউকে সামনে রাখেন না। তাছাড়া ইউক্রেন কেলেঙ্কারির পর থেকে প্রশাসন আরও সচেতন। সর্বশেষ কথোপকথন সম্পর্কে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুতিনের ফোনের সময় ট্রাম্প ছুটিতে ফ্লোরিডায় অবস্থান করছিলেন। তাছাড়া এ বিষয়ের বিবৃতি বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চ কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই সেটা জন সমক্ষে প্রকাশ করা হয়। ছুটির মৌসুম চলায় পুরো প্রক্রিয়া দেরি হয়েছে। 

ট্রাম্প পুতিনের কথোপকথন বিষয়ে জন্ম নেওয়া প্রশ্নের সদুত্তর কেউ দিতে পারছে না। সামনের বছর রাশিয়ার ৭৫তম বার্ষিকীতে পুতিনের আমন্ত্রণ পেয়েছেন ট্রাম্প। সে আমন্ত্রণে এখনও সাড়া দেননি তিনি। তবে সেখানে গিয়ে আরও প্রশ্নে জন্ম দিবেন কি’না সেটা ভবিষ্যতে জানা যাবে। 

ইত্তেফাক/এসইউ