শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ট্রাম্পের অভিশংসনে সিনেটে বিচার শুরু

আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২০, ০৫:১১

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিচার শুরু হয়েছে। দেশটিতে তৃতীয় কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের ইস্যুতে সিনেটে বিচার শুরু হলো। এতে সভাপতিত্ব করছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জন রবার্টস। সিনেটররা আইন ভঙ্গ করেন কি না সেটি দেখবেন তিনি। যদিও প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করা হবে কি না সেই রায় দেবেন সিনেটররা। সিনেটে যখন নিজের অভিশংসনের বিচার চলছে তখন সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেখানে তিনি সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের

নতুন পদ্ধতি নিয়েই বিতর্ক
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর একটায় সিনেটে বিচার শুরু হয়। প্রথমেই বক্তব্য দেন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককোনেল। তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষেই কথা বলেন। এর আগে সোমবার মিচ ম্যাককোনেল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিচার নিয়ে কিছু আইন ও নীতির কথা প্রকাশ করেন। গতকালও সেটি উপস্থাপন করেন তিনি। এরপর সিনেটের ক্লার্ক সেটি পড়ে শোনান। এর ওপর এক ঘণ্টার বিতর্কে অংশ নেন প্রতিনিধি পরিষদের ম্যানেজার তথা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটদের প্রসিকিউশনের নেতৃত্ব দেওয়া ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান অ্যাডাম স্কিফ। তিনি মিচ ম্যাককোনেলের প্রস্তাবে সংশোধনী আনার দাবি জানান। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে আইনজীবীদের নেতা হোয়াইট হাউজের প্যাট সিপোলোনি এক ঘণ্টার যুক্তিতে বলেন, বিচারকাজ পরিচালনার জন্য নতুন নীতি খুবই নিরপেক্ষ পদ্ধতি।

মিচ ম্যাককোনেল উদ্বোধনী যুক্তিতর্কের জন্য উভয়পক্ষকে ২৪ ঘণ্টা করে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেধে দিয়েছেন। বিচারে নতুন সাক্ষীর প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করেন। মূলত তিনি দ্রুত বিচারকাজ শেষ করার কথা বলেছেন। চার দিনের মধ্যে যুক্তিতর্ক শেষ করতে হবে। আর কোনো প্রমাণ গ্রহণ করা হবে কি না সেই বিষয়ে ভোট চেয়েছেন তিনি। গতকাল শুনানির শুরুতেই ডেমোক্র্যাট দলের নেতা চাক শ্যুমার বলেন, নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াকে অন্ধকারে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। টেলিভিশনে গভীর রাতে সম্প্রচারের বিষয়ে শ্যুমার বলেন, এর ফলে মার্কিনীরা এই যুক্তিতর্ক দেখতে পারবেন না।

দুই পক্ষের আইনজীবীর দুই ঘণ্টার যুক্তিতর্ক শেষে চাক শ্যুমার সংশোধনীর প্রস্তাব দেবেন। এরপর দুই পক্ষ আবার তাদের প্রস্তাবের বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করবেন। পরে সিনেটে দুই পক্ষের প্রস্তাব ভোটে পাঠানো হবে। রবিবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন বিচার কাজ চলবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত জানুয়ারির শেষ নাগাদও চলতে পারে। ১০০ আসনের সিনেটে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরাতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন। কিন্তু সিনেটে ডেমোক্র্যাট সিনেটর মাত্র ৪৭। আর রিপাবলিকানরা ৫৩ হওয়ায় ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত খালাস পাবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে ব্যতিক্রমী কিছু ঘটলে তার স্থলে নতুন প্রেসিডেন্ট হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।

আরও পড়ুন: মার্কিন ‘চাপে’ হরমুজ প্রণালীতে জাহাজ পাঠাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

ডাভোসে ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার অর্থনীতিকে রক্ষা করবে। ট্রাম্প আরো বলেন, এখন আশাবাদ প্রকাশের সময়, হতাশার নয়। তিনি সুইডিশ জলবায়ু কর্মীর নাম উল্লেখ না করেই জলবায়ু নীতি নিয়ে ঐ কিশোরীর সমালোচনা করেন। তিনি জলবায়ু ইস্যুকে সবসময়ই প্রাকৃতিক বলে উল্লেখ করে আসছেন। আর গ্রেটা থানবার্গ জলবায়ু নীতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনা করেন। তিনি ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি জানি, আপনি জলবায়ু নিয়ে কিছু বলতে চান না। থানবার্গ বলেন, জলবায়ু নিয়ে বিশেষ কিছু এখনো করা হয়নি।

ইত্তেফাক/এসইউ