শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভারতে কলেজে মেয়েদের অন্তর্বাস খুলে দিতে হল প্রমাণ ! 

আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৭:৪৩

ঋতুস্রাব পরীক্ষার নামে ভারতে কলেজ হোস্টেলে মেয়েদের অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দেশটির গুজরাট রাজ্যের একটি কলেজে একদল ছাত্রীকে অন্তর্বাস খুলে তাদের ঋতুস্রাব চলছে না তা প্রমাণ করতে বাধ্য করা হয়।   

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাটের শ্রী সহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটে এ ঘটনার পর হোস্টেল কর্মকর্তা এবং দুই শিক্ষকের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। 

দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়,  মোট ৬৮ জন ছাত্রীকে বাধ্য করা হয় তাদের যে ঋতুস্রাব চলছে না, তা প্রমাণ করতে।

সহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের ছাত্রীরা জানিয়েছেন, তাদেরকে দল বেঁধে কলেজের ক্যাম্পাস থেকে টয়লেটে হেঁটে যেতে বাধ্য করা হয়। সেখানে তাদের কাপড় খুলতে বলা হয়।

বিবিসিকে কয়েকজন ছাত্রী জানান,  বিষয়টি বাইরে প্রকাশ না করার জন্যও কলেজের কর্মকর্তারা তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এক ছাত্রী জানান, ১১ ই ফেব্রুয়ারি পুরো কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। তারা একে একে আমাদের বাথরুমে নিয়ে গেছে, সেখানে আমাদের পরীক্ষা করে দেখেছে আমাদের ঋতুস্রাব চলছে কিনা।

'ওরা আমাদের গায়ে স্পর্শ করেনি, কিন্তু মৌখিকভাবে আমাদের এমন হেনস্থা করেছে যে আমরা আমাদের কাপড় খুলে ওদের পরীক্ষা করতে দিতে বাধ্য হয়েছি।' 

ভারতের অনেক অঞ্চলেই মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে নানা কুসংস্কার রয়েছে।

ওই কলেজের ছাত্রীনিবাসের কয়েকজন কর্মচারী নাকি অভিযোগ করেছিলেন, এসব ছাত্রী নিয়ম ভঙ্গ করছে। 

 জানা যায়, সহজাননন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটট পরিচালনা করে একটি হিন্দু ট্রাস্ট।  যখন মেয়েদের ঋতুস্রাব চলে, তখন তাদের ছাত্রীনিবাসের রান্নাঘরে প্রবেশ করা নিষেধ।

কলেজের একজন কর্মচারি দর্শনা ঢোলাকিয়া বলন, এই মেয়েরা স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছিল তাদের ঋতুস্রাব চলছে কিনা সেটি পরীক্ষায়। তখন কলেজের কর্মীরা তাদের পরীক্ষা করেছে। কিন্তু তাদের শরীর কেউ স্পর্শ করেনি। এই মেয়েদের ঋতুস্রাব চলছিল। তারা এর জন্য ক্ষমা চেয়েছে। এখানে মেয়েরাই দোষী, কারণ তারা মিথ্যে বলেছিল।

ভারতের অনেক অঞ্চলে মেয়েদের ঋতুস্রাবের ব্যাপারটিকে এখনো  ঘৃণার সঙ্গে দেখা হয়।  যখন মেয়েদের ঋতুস্রাব চলে, তখন তাদের নোংরা বলে গণ্য করা হয়।  তাদের প্রার্থনার জায়গা সহ অনেক জায়গাতেই প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।  বিবিসি।

ইত্তেফাক/এসআর