তাবলিগ জামাতের সদর দফতর ভারতের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ। এখানেও হানা দিয়েছে করোনা ভাইরাস।
এরই মধ্যে তাবলিগ জামাতের অন্তত সাতজন, কারও কারও মতে ১০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এতে করে প্রশ্ন উঠেছে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ কি তাহলে ভারতে মহামারি ছড়ানোর অন্যতম হটস্পট?
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মসজিদটিতে একটি ধর্মীয় সমাবেশ উপলক্ষে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার লোক সমবেত হয়েছিলেন। শহরের একটি ঘিঞ্জি এলাকায় ছয়তলা ভবনের ডর্মিটরিতে তারা সবাই গাদাগাদি করে ছিলেন।
এর মধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুসলিমরা যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন বিদেশি নাগরিকও।
এদের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মিয়ানমার, কিরঘিস্তান, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, জিবুতি, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ফিজি, ফ্রান্স বা কুয়েতের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় ৩শ তাবলিগ সদস্য ছিলেন।
এই বিদেশি নাগরিকের প্রায় সবাই পর্যটক ভিসা নিয়ে ভারতে এসে ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। যা আইন-বিরুদ্ধ।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এদের প্রত্যেককে ব্ল্যাক লিস্টেড করে ভারতে আসা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
তাবলিগ জামাতের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: এনডিটিভি
ওই সমাবেশে যোগ দিয়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ার পর সোমবার তেলেঙ্গানা রাজ্যে ছয়জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর আগে নিজামুদ্দিন থেকে ফিরে কাশ্মীরের এক ধর্মীয় নেতাও শ্রীনগরে কয়েকদিন আগে মারা যান।
এদিকে নিজামুদ্দিন মারকাজে অবস্থানরত প্রায় ৩শ ব্যক্তিকে করোনা ভাইরাসের মতো উপসর্গ নিয়ে সোমবার দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৪ জনের পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে।
এছাড়া ৭শ’র মতো লোককে সরকারি বাসে করে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
দিল্লিতে তাবলিগ জামাত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশ একটি মামলা দাখিল করেছে।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেছেন, নির্দেশ অমান্য করে সমাবেশ করায় তাদের বিরুদ্ধে যাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেই সুপারিশ করে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছেও চিঠি লিখেছি।
এদিকে এই মুহূর্তে ভারত সরকারের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হলো, তাবলিগ জামাতের সমাবেশে যোগ দিয়ে যারা এর মধ্যেই নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছেন তাদেরকে নিয়ে।
এদিকে তাবলিগ জামাত কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, প্রথমে দিল্লি সরকার এবং পরে প্রধানমন্ত্রী মোদি লকডাউন ঘোষণা করার পরই সারা দেশে ট্রেন ও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণেই তাদের সদস্যরা আটকা পড়েন এবং এক জায়গায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে বাধ্য হন। খবর: বিবিসি
ইত্তেফাক/জেডএইচ