তুরস্কের বিখ্যাত জাদুঘর হাজিয়া সোফিয়াকে মসজিদে পরিণত করার ঘোষণায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিন্দা ও সমালোচনা জানিয়েছে। সেইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এনিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছেন। তবে এসব নিন্দা ও সমালোচনাকে পাত্তা দিলেন না দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান।
এনিয়ে শনিবার এরদোয়ান বলেন, জাদুঘর থেকে হাজিয়া সোফিয়াকে মসজিদে রুপান্তর করার সিধান্ত তার দেশের 'সার্বভৌমত্ব অধিকার' ব্যবহার করার ইচ্ছা প্রতিনিধিত্ব করে।
এর আগেও তিনি বারবার এই জাদুঘরকে মসজিদে পরিণত করার জন্য বারবার জানান। এবং এরদোয়ান সরকারের আমলে সেখানে কোরআন পাঠের অনুমতি দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আরও বলেন, যারা নিজের দেশে ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয় না... তারা তুরস্কের সার্বভৌম অধিকারের ইচ্ছাকে আক্রমণ করছে।
শুক্রবার তুরস্কের আদালত হাজিয়া সোফিয়া’র জাদুঘর মর্যাদা নাকচ করে দেওয়ার এক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সেটিকে মসজিদ করার ঘোষণা দেন।
দেশটির আদালতের এমন রায়ের কিছুক্ষণের মধ্যেই রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চ এর নিন্দা জানায়। রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির উপ-প্রধান ভ্লাদিমির ঝাবারভ তুরস্কের এই সিধান্তকে 'ভুল' পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্কের এই সিধান্তকে 'দুঃখজনক' বলে উল্লেখ করেছে।
এই সিদ্ধান্তকে গ্রিস সভ্য বিশ্বে তুরস্কের উসকানি হিসেবে উল্লেখ করেছে। এক বিবৃতিতে গ্রিসের সংস্কৃতিমন্ত্রী লিনা মেন্ডনি বলেন, এরদোয়ান যে জাতীয়তাবাদ দেখালো... তা তার দেশকে ছয় শতাব্দী পিছনে নিয়ে গেল।
এছাড়া সাইপ্রাস তুরস্কের এই রায়ের কড়া নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিকদায়বদ্ধতার প্রতি তুরস্ককে শ্রদ্ধা জানাতে আহ্বান করে।
হাজিয়া সোফিয়ার মর্যাদা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র হতাশ বলে জানিয়েছে।
সেইসঙ্গে ইউনেস্কো জানিয়েছে, তারা হাজিয়া সোফিয়ার মর্যাদা পর্যালোচনা করে দেখবে। এজন্য তারা তুরস্ককে একটি সংলাপে বসার আহ্বান জানায়।
দেড় হাজার বছরের পুরনো হাজিয়া সোফিয়া এক সময় ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা, পরে তা পরিণত হয় মসজিদে। এরপরে একে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। বিবিসি, আল জাজিরা।
ইত্তেফাক/এসআর