ইরানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এতে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে এবং হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত।
দেশটিতে করোনায় সংক্রমণ কমে আসায় মধ্য এপ্রিলে নানা বিধি-নিষেধ শিথিল করেছে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে দেশটিতে ব্যাপক বেড়েছে সংক্রমণ।
বিবিসির প্রতিবেদবে বলা হয়েছে, দেশটিতে মধ্য জুন নাগাদ মৃতের সংখ্যা একশ ছাড়ায় যা দু মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এবং এরপর থেকে করোনায় মৃতের সংখ্যাটা বাড়ছেই।
গত ৯ই জুলাই ইরানে একদিনে মারা গেছে সর্বোচ্চ ২২১ জন। এছাড়া এর আগে গত ৪ই জুন দেশটিতে শনাক্ত হয়েছিল ৩,৫৭৪ জন। এখন এর চেয়ে দিনে অন্তত দুই হাজার করে বেশি মানুষ শনাক্ত হচ্ছে।
এর আগে সর্বোচ্চ ৩,১৮৬ জন শনাক্ত হয়েছিলো গত ত্রিশে মার্চ। সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের পর ইরানেই সবচেয়ে বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছিলো।
করোনার প্রকোপ ঠেকাতে যে বিধিনিষেধ জারি করা হয় তা এপ্রিলে ইরান শিথিল করতে শুরু করে। গত ২০ এপ্রিল দেশটিতে শপিং মল ও বাজার খুলে দেয়া হয় সেইসঙ্গে প্রদেশগুলোর মধ্যে যাতায়াত শুরু হয়। এরপর ২২শে এপ্রিল পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয় দেশটি।
এর পরের মাসে ১২ই মে ইরান সরকার সব মসজিদ খুলে দেয়ার অনুমতি দেয়। ২৬শে মে উন্মুক্ত করে দেয় রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, জাদুঘর ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো।
আর এসবের পর ইরানজুড়ে সিটি পরিবহন, ব্যাংক, অফিসগুলো লোকারণ্য হতে শুরু করে।
এর আগে শুরুতে কওম আর তেহরানে সংক্রমণ সীমাবদ্ধ ছিলো। কিন্তু এখন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে খুজেস্তান প্রদেশে এই সংক্রমণ বাড়ছে।
ইরানের মহামারি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেহেদী গৌয়া অবশ্য বলেছেন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ার কারণ হল তারা আক্রান্ত হননি বা অল্প লক্ষণ দেখা গেছে এমন ব্যক্তিদেরও চিহ্নিত করার কাজ করছেন।
ইরানে নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানো হয়েছে এবং প্রতি ৪৫জনে একজনের পরীক্ষা করার পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইদ নামাকি বলেছেন, লোকজন সামাজিক দূরত্বে বিধি-নিষেধ অগ্রাহ্য করছে।
এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৪০ ভাগ মানুষ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলছেন, গণপরিবহনে বা ভিড় হয় এমন জায়গায় অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে এবং প্রয়োজন হলে পুলিশ এটি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেবে। বিবিসি।
ইত্তেফাক/এসআর