বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনায় মারা গেছেন বাবা, হাসপাতাল হেল্পলাইন প্রতিদিন জানায় রোগী সুস্থ!

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২০, ১৬:৫৬

অসুস্থ বাবা যখন করোনায় আক্রান্ত, তখন কোভিড ১৯ হাসপাতালে ভর্তি করা ছাড়া উপায় নেই ছেলের। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির দিনেই মারা গেছেন বাবা। আর হাসপাতালের হেল্পলাইনে ফোন দিয়ে খবর জানতে চাইলে, প্রতিদিনের উত্তর হল ‘সুস্থ আছেন রোগী’।

ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রাণ কেন্দ্র কলকাতার। করোনায় মৃত হাওড়ার সলপের বাসিন্দা অজয় মান্নার ছেলে জানালেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা। 

তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন ফোন করে গ্রিন বিল্ডিংয়ের ৪০৪ নম্বর শয্যার রোগী কেমন আছেন? কোভিড হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হেল্পলাইনে ফোন করে দিনে দুবার এভাবেই খবর নেই। কিন্তু  প্রতিবারই জবাব আসত, ‘রোগী সুস্থ’। ‘অল্প শ্বাসকষ্ট ছাড়া তেমন সমস্যা নেই’।

৬৮ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ বাবার খোঁজ নেওয়ার অভিজ্ঞতা এভাবেই বর্ণনা করেন তিনি। তিনি বলেন, ভর্তির প্রায় চার দিন এভাবে চলা পর গত মঙ্গলবার বাবার সঙ্গে সরাসরি কথা বলার জন্য চিকিৎসাধীন ওয়ার্ডে ফোন দেন। 

এরপরই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ছেলে। কারণ, ৪০৪ নম্বর বেডে বাবা নেই। সরকারি হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয়ে বাবার খোঁজ নিতে গিয়ে ছেলে জানতে পারেন, ভর্তির দিন সন্ধ্যাতেই মারা গেছেন তার বাবা।

মৃতের ছেলে বৃদ্ধের ছেলে রবীন জানান, গত এক বছর ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন তার বাবা। এক চিকিৎসকের পরামর্শে গত বৃহস্পতিবার ক্যানসার ব্লকে ভর্তি করানোর জন্য বাবাকে নিয়ে যান এসএসকেএম এ। কিন্তু রোগীকে ভর্তি করানোর আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়। দুপুর ১টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গ্রিন বিল্ডিংয়ে রোগীকে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রবীনকে একটি হেল্পলাইন নম্বর দেয়। প্রতিদিন সে নম্বরে ফোন করে খবর নিতেন রবীন।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, বৃদ্ধের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কম ছিল। সে জন্য করোনা সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রিন বিল্ডিংয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল। 

হাসপাতাল উপাধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, ওই ব্যক্তির পরিবারের যে ফোন নম্বর ছিল তাতে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু নম্বরটি ভুল ছিল। এর পর নিয়মানুযায়ী বিষয়টি হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে জানানো হয়। পরে বউবাজার থানার মাধ্যমে ডোমজুড় থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। তার তথ্যপ্রমাণও রয়েছে।

আরও পড়ুন: জঙ্গিদের নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমের খবর প্রত্যাখ্যান করল পাকিস্তান

হেল্পলাইন নম্বরের ভূমিকা নিয়ে উপাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘বেড নম্বর ধরে রোগীর খবর নিয়ে ভুল হতে পারে। নাম, বয়স ঠিকমতো বলা হয়েছিল কি না, তা দেখতে হবে।’’


ইত্তেফাক/আরআই