লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে শহরটির ‘অর্ধেক’ অংশই ধূলিসাত্ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় গভর্নর মারওয়ান আবৌদ।
তিনি আরো জানিয়েছেন, স্মরণকালের ভয়াবহতম এই বিস্ফোরণে রাজধানীর অন্তত ৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। কারণ বিস্ফোরণে সৃষ্ট কম্পনে অগণিত বাড়িঘর এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এসব বাড়ির বাসিন্দারা হয় খোলা আকাশের নিচে, নয়তো অন্যের বাড়ির আনাচে-কানাচে বা নিচে আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকার ঐ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ১০০ জনের প্রাণহানি ও ৪ হাজারের বেশি লোক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে রয়েছে। বিধ্বস্ত বন্দর এলাকায় গতকালও কিছু কিছু জায়গায় ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। এখানে-সেখানে নিখোঁজদের খুঁজে বেড়াচ্ছে স্বজনেরা। এ ঘটনায় গোটা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বৈরুতের হাসপাতালগুলোতে গতকাল উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। স্থানের সংকটের কারণে হাসপাতালের বাইরেই আহতদের সেবা দিচ্ছেন চিকিত্সকেরা। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের কারণ এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক প্রধান বলেছেন, ভয়াবহ বিস্ফোরক রাসায়নিক পদার্থ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তারা বলছেন, এটি কোনো সন্ত্রাসী হামলা নয়, নিছক দুর্ঘটনা। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র থাকার সম্ভাবনাও তারা উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলছেন, গুদামে ছয় বছর ধরে বিপজ্জনক বিস্ফোরক দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। সেগুলো থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এ ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রীয় বিপর্যয়’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, যাদের গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক টু?ইট বার্তায় বলেছেন, কোনো গুদামে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক অনিরাপদভাবে মজুত রাখার বিষয়টি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এ ব্যাপারে মন্ত্রিসভার বিশেষ একটি বৈঠক ডেকেছেন প্রেসিডেন্ট। গতকাল বুধবার থেকে তিন দিনের জন্য লেবাননে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ইত্তেফাক/এমএএম