শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ট্রাম্প-বাইডেন প্রথম টিভি বিতর্ক আজ

অর্থনীতি ইস্যুতে এগিয়ে ট্রাম্প করোনা, অভিবাসনে বাইডেন

আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৩৪

আগামী নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কিন্তু এরই মধ্যে নির্বাচনের উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। বিশেষ করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছেন সেটা নজিরবিহীন। অনেকেই বলছেন, ধরনের আগ্রাসি ব্যক্তিগত আক্রমণ তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের নির্বাচনেও দেখা যায় না।

 

তবে এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ইস্যুর চেয়েও বড় হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, করোনা পরিস্থিতি, অভিবাসন, বর্ণবাদ সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের মতো ইস্যু। অর্থনীতির ইস্যুতে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা, অভিবাসন বর্ণবাদের মতো ইস্যুতে ভালো অবস্থানে রয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

 

পরিস্থিতির মধ্যেই আজ থেকে শুরু হচ্ছে দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মুখোমুখি বিতর্কের সিরিজ। বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সকাল ৭টায় মুখোমুখি হবেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডের কেজ ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত বিতর্ক সিএনএন, ফক্স নিউজ, সিবিএস, এবিসি, সি-স্প্যান, এনবিসি এমএনবিসি সরাসরি সম্প্রচার করবে। ফক্স নিউজ সানডের উপস্থাপক ক্রিস ওয়ালেস বিতর্ক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্প হিলারির মধ্যকার বিতর্ক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছিলেন।

 

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ, করোনা মহামারি, সহিংস অপরাধ, অভিবাসন জলবায়ু। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে জোর দিচ্ছেন অর্থনীতির ওপর। কারণ তার সময়েই যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার সবচেয়ে কমেছিল। করোনার কারণে অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগলেও অর্থনীতির ব্যাপারে মার্কিনিরা ট্রাম্পের ওপরই আস্থা রাখছে। বিশেষ করে স্যুইং স্টেটগুলোতে অর্থনীতিতে বাইডেনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 

করোনা ভাইরাসে কোভিড-১৯- সংক্রমণ মৃতের সংখ্যায় সবার শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। অনেক মার্কিনির মতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা পরিস্থিতি দক্ষভাবে সামাল দিতে পারেননি। শুরু থেকে ট্রাম্প জোরালো পদক্ষেপ নিলে যুক্তরাষ্ট্র এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। জো বাইডেন ইস্যুতে ট্রাম্পকে আক্রমণ করে চলেছেন। মার্কিনিরাও মনে করেন, ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেন করোনা পরিস্থিতি আরো দক্ষভাবে সামাল দিতে পারবেন। স্যুইং স্টেট যেখানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে সেখানে করোনা ইস্যুতে ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেনের ওপরই বেশি মার্কিনিদের আস্থা রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলে সুবিধা পেতে পারেন বাইডেন। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আর অর্থনীতি প্রাণ ফিরে পেলে এসব রাজ্যে ট্রাম্পের জয় ঠেকানো কঠিন হবে বাইডেনের জন্য।

 

কিছুদিন আগেই মারা গেছেন সুপ্রিম কোর্টের উদারপন্থি নারী বিচারপতি রুথ বাদের গিন্সবার্গ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকতেই নতুন একজন রক্ষণশীল বিচারপতিকে নিয়োগ করতে। এরই মধ্যে তিনি তার মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন। যদিও বাইডেন বলেছেন, নভেম্বরের নির্বাচনের পরই নতুন প্রেসিডেন্টের এই বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া উচিত। বাইডেনের এই অবস্থানকেই সমর্থন করছেন বেশির ভাগ মার্কিনি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক জরিপে ৫৬ শতাংশ মার্কিনি নির্বাচনের পর বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন।

 

অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনায় নেমেছে জো বাইডেন শিবির। গত চার বছরে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বাইরে ক্ষোভ তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড়সংখ্যক ভোটার হলো অভিবাসী। অভিবাসীদের অবস্থা পর্যালোচনা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জো বাইডেন এই ইস্যু লুফে নিয়েছেন। অনেকে মনে করছেন, অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের চেয়ে বেশি সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এগিয়ে আছেন বাইডেন।

 

 

ইত্তেফাক/এসি