কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়ার পর তিনি আদৌ ঠিক কাজ করেছেন কি না, তা নিয়ে ভারতে উত্তপ্ত বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারতীয়রা অনেকেই যেমন ট্রুডোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন, তেমনি সেদেশের নেটিজেনদের একটা বড় অংশ আবার তাকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
অনেকে আবার মনে করছেন, ভারতে আন্দোলনরত কৃষকদের বেশিরভাগই যেহেতু পাঞ্জাবের শিখ, তাই কানাডায় শিখ বংশোদ্ভূতদের সমর্থন পেতেই ট্রুডো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঐ বিবৃতি দিয়েছেন।
উদ্দেশ্য যাই হোক, ট্রুডোর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতীয়রা এখন যে কার্যত দুই ভাগ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এর আগে সোমবার শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি ফেসবুক ইন্টারঅ্যাকশনে অংশ নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, ভারতে কৃষক আন্দোলনের জেরে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।
পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে কোনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সবসময় কানাডার সমর্থন থাকবে সে কথাও তখন জানিয়েছিলেন তিনি। ঐ ভার্চুয়াল সভায় তখন ক্যাবিনেট ট্রুডোর শিক সদস্যরা ও লিবারেল পার্টির অন্য শিখ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এই মন্তব্য সামনে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পালটা বিবৃতি দিয়ে জানায়, একটি গণতান্ত্রিক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এভাবে নাক গলানো সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত।
দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ভালো করে না জেনেশুনেই এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে কানাডিয়ান নেতৃত্বের বিরত থাকা উচিত। কিন্তু ট্রুডোর মন্তব্যকে সমর্থন করেও অনেক ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করতে শুরু করেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও অধিকার কর্মী প্রশান্ত ভূষণ টুইট করেন, ‘আমি খুব খুশি যে ট্রুডো ভারতে কৃষকদের অধিকারের পক্ষে মুখ খুলেছেন। সব বিশ্ব নেতারাই উচিত সব দেশে গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য সরব হওয়া। এই ইস্যুটাকে যে তিনি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করছেন না, সেটাও স্পষ্ট করে দেন প্রশান্ত ভূষণ। সূত্র: বিবিসি।
ইত্তেফাক/বিএএফ