ভারতীয় মুসলিমদের কাছে ধর্মের চেয়ে দেশই বড় বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির অল ইন্ডিয়া ইমাম অর্গানাইজেশনের (এআইইও) প্রধান ইমাম ড. ওমর আহমেদ ইলিয়াসী। ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮তে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। একইসঙ্গে ভারতে মুসলিমের নিরাপত্তা ও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
খবরে বলা হয়েছে ইমাম ইলিয়াসী জানিয়েছেন, আমাদের পরিচয় আমরা ভারতীয়। ধর্ম আলাদা হতে পারে, বর্ণ আলাদা হতে পারে, ধর্মীয় ঐতিহ্য আলাদা হতে পারে এবং উপাসনার পদ্ধতিও আলাদা হতে পারে তবে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম হল মানবতা এবং দ্বিতীয় ধর্ম ভারত যদি আপনি ভারতে বাস করেন। আপনি যদি আমেরিকা যান এবং কেউ যদি বলেন আমি আমেরিকান মুসলিম, তখন লোকেরা রেগে যায়। এই প্রশ্নটি পৃথিবীর কোথাও আসে না। আমরা ভারতীয় হতে পেরে গর্বিত এবং আমি একজন ভারতীয়। আমাদের ধর্মের সাথে সংযুক্ত করবেন না, ভারত ও ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে যুক্ত করুন। জাতি সবার উপরে।
ভারতকে নিয়ে তিনি গর্বিত উল্লেখ করে এই ইমাম বলেন, এখন পর্যন্ত ভারত কোনো দেশকে আক্রমণ করেনি। কোনো দেশের অংশ দখলও করেনি। এটাই ভারতের সম্মান। আজ আমাদের ভারত যে গতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে তাতে পুরো বিশ্ব এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ পুরো বিশ্ব আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করছে, আমি শ্রীলঙ্কা থেকে টেলিফোন কল পাচ্ছি, বাংলাদেশ থেকে। পুরো বিশ্ব ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য অনুরোধ করছে।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ভারতে ছড়িয়ে পড়া গুজব প্রসঙ্গে ড. ইলিয়াসী বলেন, আপনার মনে থাকার কথা, পোলিও ফোঁটা নিয়ে আমাকে খুব কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল। আমি আজ থেকে ২০ বছর আগের কথা বলছি। যখন পোলিও টিকা প্রদান শুরু হয়েছিল তখন কিছু লোক জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিল এই টিকা খাবেন না। তেমনিভাবে চিকেনপক্সের সময়ও কিছু লোক গুজব ছড়িয়েছিল। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়াতে চান তারা ছড়াবেনই। আমাদের এই ধরণের গুজবে ভয় পাওয়া উচিত নয়। ভারত ভ্যাকসিন তৈরি করায় আমরা গর্বিত।
ভারতে মুসলিমদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে দেশটির এই মুসলিম নেতা বলেন, আমি চীনকে দেখিয়ে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। ইবাদতের স্বাধীনতা চীনের মুসলমানদের নেই। তারা টুপি পরতে পারে না এবং দাড়ি রাখতে পারে না। তারা রমজানে রোজাও রাখতে পারে না। এরপরেও আমাদের প্রতিবেশী দেশ নিজের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে গর্বিত। অন্যদিকে ভারতে সব ধর্মের মানুষকে সম্মান করা হয়। এমন আর কোনো দেশ কেউ দেখাতে পারবে? আমি এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।
ইত্তেফাক/এসএ