শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পাকিস্তানের ব্রডশিট কেলেঙ্কারির আদ্যোপান্ত

আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২১, ১৭:৫৯

পাকিস্তানের ইতিহাসে আর্থিক কেলেঙ্কারির অনেক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সর্বশেষটি হল ব্রডশিট স্ক্যান্ডাল। এ ঘটনা ঘটেছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও সামরিক শাসক পারভেজ মোশারফের সময়কালে। 

নওয়াজ শরিফ, বেনজির ভুট্টো ও তার স্বামী আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে শক্ত অভিযোগ তৈরি করাই ছিল এই ঘটনার মূল উদ্দেশ্য। এই বিদ্বেষের প্রথম পর্যায় শুরু হয় নওয়াজের দুই মেয়াদের মুখপাত্র সংসদ সদস্য সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে। বিদ্বেষের পরিণতিতে আসিফ আলী জারদারি ১১ মাসেরও বেশি সময় বিনা বিচারে কারাগারে বন্দি ছিলেন। আর বেনজির ভুট্টোকে মিথ্যা মামলার মোকাবেলা করতে একের পর এক আদালতে ঘুরে বেড়াতে হয়।

তাদের বিরুদ্ধে একবারই সাজার ঘোষণা আসে। তা ঘোষণা করেন বিচারপতি কাইযুম। তিনি সর্বোচ্চ সাজাই দিয়েছিলেন। এজন্য এই বিচারপতিকে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সতর্কও করে দেয়। 

জেনারেল আমজাদের কথা অনুযায়ী, অভিযোগের শিকার ব্যক্তিদের বিদেশি সম্পদ আছে এমন কোনো প্রমাণ ব্রডশিট দিতে পারেনি। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ও আমেরিকান এসেট রিকভারি ফার্ম ট্রোভনসের মধ্যে আদানপ্রদান হওয়া শত শত চিঠিপত্র, মামলার কাগজপত্র ও আমজাদের জবানবন্দি থেকে বিষয়টিতে অব্যবস্থাপনা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা স্পষ্ট হয়। 

জেনারেল পারভেজ মোশারফ ক্ষমতায় থাকতে নওয়াজ শরিফ ও জারদারির বিরুদ্ধে ব্রডশিটকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিলেন। পিপিপি যথাযথভাবে বিশ্বাস করে জেনারেল মোশাররফ তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজের সরকার গঠনের জন্য পিপিপির নির্বাচনী সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভেঙে ন্যাবকে ব্যবহার করেছিলেন। এখন তারা নিজেদের মনগড়া অভিযোগেই আটকা পড়েছে। 

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, লুট হওয়া টাকা পুনরুদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই ব্রডশিট কেলেঙ্কারি আরেকটি মেগা স্ক্যান্ডাল হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এ নিয়ে বিরোধীদলের চাপে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তারা একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন তৈরি করতে ইমরানকে চাপ দিচ্ছেন।

শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে নওয়াজ ও তার লোকদের পেছনে অনুসন্ধান করতে সাত কোটি রূপি ব্যয় করেছে ব্রডশিট কিন্তু কিছুই পায়নি। শুধু এই সপ্তাহেই লন্ডন হাইকোর্টে নওয়াজের পরিবারকে আইনি  খরচা বাবদ ২০ হাজার পাউন্ড দিতে বাধ্য হয়েছে পত্রিকাটি। 

লেখক: ওয়াজিদ শামসুল হাসান। তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

ইত্তেফাক/এসএ