শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বর্ণবাদসহ হ্যারি-মেগানের প্রতি রাজপরিবারের আচরণে ক্ষুব্ধ রানি

আপডেট : ১১ মার্চ ২০২১, ০৮:৪৬

ব্রিটেনের প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী প্রিন্সেস মেগান মার্কেলের মার্কিন সিবিএস টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাত্কার নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজপরিবারের বিরুদ্ধে তাদের অনেক অভিযোগ। এসব অভিযোগ নিয়ে জবাব দেওয়ার জন্য বাকিংহাম প্যালেসের ওপর চাপ বাড়ছিল। অবশেষে অভিযোগের জবাব না দিলেও মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ এবং বিষয়টি পারিবারিক স্তরে মিটিয়ে ফেলার আশ্বাস দিয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার এই বিবৃতি নিয়ে নানা বিশ্লেষণ চলছে। ব্রিটেনের জনপ্রিয় ডেইলি মেইল অনলাইন রাজপরিবার বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রথমত, বিবৃতিতে রানি বলেছেন, গত কয়েক বছর হ্যারি ও মেগান রাজপরিবারে খুবই চ্যালেঞ্জিং সময় কাটিয়েছেন জেনে তিনি দুঃখবোধ করছেন। রানির সাবেক প্রেস সেক্রেটারি চার্লস অ্যানসন বলেন, এই ঘটনা জেনে রানি প্রথমেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি স্কাই নিউজকে বলেন, আমার মনে হয় এই বিষয়টা সামাল দেওয়া একটু কঠিন। তাই রানি চাইছেন জনসম্মুখে বিষয়টি প্রকাশ না করে পারিবারিকভাবেই সমস্যার সমাধান করতে। রানি এটা বোঝাতে চাইছেন, হ্যারি-মেগান যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন তারা ভালোবাসা পাবে। রাজপরিবার বিষয়ক লেখক ফিল ড্যাম্পিয়ার বলেন, আমি নিশ্চিত যে রানি এই ঘটনায় দুঃখ পেয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্তরেই তা মিটিয়ে নেবেন।

দ্বিতীয়ত, রানি বর্ণবাদের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে এও বলেছেন, অতীতের অনেক স্মৃতিতে হয়তো ভিন্নতা থাকতে পারে। তারপরও এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হবে এবং পারিবারিকভাবে খতিয়ে দেখা হবে। ফিল ড্যাম্পিয়ার বলেন, রানি বলেছেন, স্মৃতিতে পার্থক্য বা সবকিছু ঠিক নাও থাকতে পারে। অর্থাৎ রানি রাজপরিবারের ঐ সদস্যের কথা বলেছেন যিনি আর্চির গায়ের রং নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু ঐ সদস্যের নাম রানি বাইরে প্রকাশ করতে চান না। কারণ তার নাম প্রকাশ করলে মানুষ তাকে ভুলতে পারবেন না, তা তিনি সঠিক বা ভুল যাই করুন না কেন।

রয়্যাল বায়োগ্রাফি টম বাওয়ার বলছেন, এর মাধ্যমে রানি ডাচেস অব সাসেক্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছেন যে, এখানে হয়তো কাল্পনিক কিছু থাকতে পারে। অভিযোগ সত্যি কি না, তা যাচাইয়ে মেগানের উচিত ঐ ব্যক্তির নাম, ঘটনাস্থল এবং কোন পরিস্থিতিতে এটা হয়েছিল সেটা প্রকাশ করা। রানি খুবই ভদ্র ভাষায় বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি চেয়েছেন, প্রথমেই তার উচিত হবে সাক্ষাত্কারের মাধ্যমে তৈরি হওয়া সমালোচনার ঝড় সামাল দেওয়া এবং এরপর রাজপরিবারের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা।

তৃতীয়ত, রানি বলেছেন, হ্যারি, মেগান এবং আর্চি সব সময়ই রাজপরিবারের ভালোবাসার পাত্র হয়ে থাকবে। ফিল ড্যাম্পিয়ারের মতে, এর মাধ্যমে রানি সম্পর্কের সেতু তৈরির বার্তা দিয়েছেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। রাজপরিবার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ফিটতউইলিয়ামসের মতে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ঠিক কাজটিই করেছেন। রানি বোঝাতে চেয়েছেন যে তাদের অভিযোগগুলো তিনি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন এবং পারিবারিকভাবেই সমস্যার সমাধান করা হবে।

চার্লস অ্যানসন বলছেন, এর মাধ্যমে রানি বোঝাতে চান, এসব সমস্যা সত্ত্বেও রাজপরিবারের অনুষ্ঠানে আসতে তাদের কোনো বাধা থাকবে না। হ্যারি ও মেগানের সাক্ষাত্কার ব্রিটেনে ১ কোটি ২৪ লাখ এবং আমেরিকায় ১ কোটি ৭১ লাখ মানুষ দেখেছেন। হ্যারি ও মেগান বর্ণবাদ, মানসিক স্বাস্থ্য, ব্রিটিশ মিডিয়া ও রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্কে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।

ইত্তেফাক/এমআর