পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসবে বলে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে আঁটসাঁট বেধে নেমেছিল ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ পর্যন্ত নির্বাচনি প্রচারণায় এসেছিলেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও প্রচারণায় আসেন। সবমিলিয়ে এবার বিপুল ব্যবধানে ক্ষমতায় আসবে বলে তারা জোর গলায় দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু গতকাল রবিবার (২ মে) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, বাংলায় তাদের ব্যাপক ভরাডুবি হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভরাডুবির কারণ খুঁজতে শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্যে দলটির নেতারা প্রাথমিক বিশ্লেষণে পরাজয়ের পেছনে পাঁচটি কারণও খুঁজে পেয়েছেন। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে সেই পাঁচটি কারণ তুলে ধরা হয়েছে।
১) মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য জনপ্রিয় মুখের অভাব। প্রচারণা পর্বে বিজেপি নেতারা অনেক পরিশ্রম করেছে ঠিকই। কিন্তু তারা জয় পেলে কাকে মুখ্যমন্ত্রী বানাবেন সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কারো নাম বলতে পারেনি। যদিও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা বারবার বলেছেন বাংলার ‘ভূমিপুত্র’ ই মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
২) বাংলার কোনো নেতাকে মুখ হিসেবে তুলে না ধরে বরং কেন্দ্রীয় নেতদের ওপরে নির্ভর করেছে দলটি। এ কারণে তাদেরকে বহিরাগত তকমা দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে তৃণমূল। আর সেটিকেই লুফে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জনগণ।
৩) ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মাত্র ৩টি আসনে জয় পেয়েছিল। সেখান থেকে ক্ষমতায় আসার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল তা দলের অভিজ্ঞতার তুলনায় অনেকটাই বেশি বলেই মনে করছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। তাছাড়া গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলকে বিধানসভার সঙ্গে তুলনা দেওয়া ঠিক হয়নি।
৪) প্রচারণায় বিজেপির অন্যতম ইস্যু ছিল মেরুকরণ বা বিভাজিকরণ। তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোষণের অভিযোগ তুলতে কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছেন। এসব কারণে মুসলিম ভোট কিছুটা এককাট্টা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু হিন্দু ভোটের সিংহ ভাগ ঝুলিতে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
৫) নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে যারা এসেছেন তাদের প্রাধান্য দেওয়ায় দলের স্থায়ী কর্মী, সমর্থক এবং ভোটটাররা ভাল চোখে নেয়নি। প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রেও অনেক ভুল ছিল।
ইত্তেফাক/টিএ