উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের অভিযোগে সম্প্রতি চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পালটা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীনও। দুই পক্ষের এমন মারমুখী আচরণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বহু আকাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ চুক্তির বাস্তবায়ন।
জার্মানি সংবাদমাধ্যম ডয়েচেভেলের বরাতে জানা যায়, ইইউ কমিশনের সহসভাপতি ভালদিস দম্ব্রভস্কিস সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা-পালটা নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতির মধ্যে এই চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ইউরোপীয় কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, চীনের সঙ্গে চুক্তি অনুমোদনের প্রক্রিয়াই এখনো শুরু হয়নি। প্রথমে যে আইনগত পর্যালোচনা হবে, সেটাও হয়নি। তার কথায়, চীন যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
গত বছর ব্রাসেলস ও বেইজিংয়ের মধ্যে সই হয়েছিল বহুল প্রত্যাশিত বিনিয়োগ চুক্তি। উদ্দেশ্য ছিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের শর্ত নির্ধারণ করে দেওয়া। টানা সাত বছর আলোচনার পর গত ডিসেম্বরে সই হয়েছিল চুক্তিটি। ইইউর নিয়ম অনুসারে, এই পর্যায়ে সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে অনুমোদন পেতে হবে চুক্তিটির। ছাড়পত্র নিতে হবে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট থেকেও। কেবল তারপর চুক্তিটি কার্যকর হতে পারে। এই চুক্তির ফলে ইউরোপীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো চীনের বাজারে প্রবেশাধিকার পেত। আর ইউরোপে চীনের বিনিয়োগের পথও প্রশস্ত হতো।
কিন্তু জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতনের অভিযোগে গত মার্চে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইইউ। জবাবে পালটা নিষেধাজ্ঞা দেয় চীনও। এরপর থেকেই চুক্তির অনুমোদন ও বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। মনে করা হচ্ছে, কূটনীতির মারপ্যাঁচে হয়তো হেরেই যাচ্ছে অর্থনীতি। আর তা হলে শেষমেশ হিমঘরে জায়গা হতে চলেছে বহু আকাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ চুক্তিটির।
ইত্তেফাক/এএইচপি