তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের চুক্তি অনুযায়ী তুরষ্ক সেখানে থেকে যেতে পারে না। এদিকে ন্যাটো সম্মেলনে যোগদানের প্রাক্কালে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ওয়াশিংটন চলে যাওয়ার পর সেখানে স্থিতিশীলতা রক্ষায় তুরস্কই হবে ‘একমাত্র নির্ভরযোগ্য’ দেশ।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও সেখানে থেকে যেতে চায় তুরষ্ক। এরই মধ্যে বিষয়টি অনেকাংশে স্পষ্ট করেছে দেশটি। এদিকে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের চুক্তি অনুযায়ী তুরষ্ক সেখানে থেকে যেতে পারে না।
তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত মাসে ন্যাটোর বৈঠকে এ ব্যাপারে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়া ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে যোগদানের প্রাক্কালে রবিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও এ বিষয়ে জোরালো ভাষায় কথা বলেছেন। এ নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আঙ্কারার আলাপ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এরদোয়ান বলেন, আফগানিস্তান ত্যাগের পর তুরস্ককে হিসাব করবে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা রক্ষায় তুরস্কই হবে ‘একমাত্র নির্ভরযোগ্য’ দেশ। সোমবার ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এ বিষয়ে তুরষ্কের বৈঠকের কথা রয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগিরই আফগানিস্তান ছাড়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। তারা চলে যাওয়ার মুহুর্ত থেকেই সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র নির্ভরযোগ্য দেশ তুরস্ক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তুর্কি কর্মকর্তা বলেন, তুরস্ক যদি আফগানিস্তানে থাকতে হয় তাহলে তারা কিসের ভিত্তিতে সেখানে থাকবে? ন্যাটো জোটের অধীনে কিংবা দ্বিপক্ষীয় শর্তে? যদি এটি ন্যাটোর পৃষ্ঠপোষকতায় হয় তাহলে তারা কার কর্তৃত্বে সেখানে থাকবে? ওই কর্মকর্তা বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো আফগানিস্তানে তুরস্কের উপস্থিতি দেখতে চায়। তারা কাবুল বিমানবন্দরের সুরক্ষা চায়। তবে কেউ সমর্থন না দিলে তুরস্ক কেন জোরালো চেষ্টা করবে? এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করা দরকার।
তুরস্ক শুধু আফগানিস্তানে অবস্থান করাই নয়; বরং কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিচালনার দায়িত্বও নিতে চায়। আঙ্কারার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। একজন তুর্কি কর্মকর্তা জানান, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সম্ভাব্য সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। ওয়াশিংটন কিছু বিষয়ে সম্মত হয়েছে। তার মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর তুরস্কের পক্ষ থেকে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
ইত্তেফাক/এএইচপি