হংকংয়ের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রপন্থি পত্রিকা অ্যাপল ডেইলি তাদের কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠার ২৬ বছর পর পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একে চীন-নিয়ন্ত্রিত শহরটির গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির বরাতে জানা যায়, পত্রিকাটির বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন জাতীয় নিরাপত্তা আইন ভঙ্গ করেছে এমন অভিযোগে গত সপ্তাহে অ্যাপল ডেইলির কার্যালয়ে হংকংয়ের পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল। পরে কোম্পানি সংশ্লিষ্ট ১ কোটি ৮০ লাখ হংকং ডলারের সম্পদও জব্দ করা হয়; গ্রেফতার করা হয় পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক ও পাঁচ নির্বাহীকে। ট্যাবলয়েড এ পত্রিকাটি চীন ও হংকংয়ের শাসকদের সমালোচনায় মুখর ছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা জিমি লাই একাধিক অভিযোগ মাথায় নিয়ে আগে থেকেই কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন।
অ্যাপল ডেইলি এর আগে তাদের পত্রিকার কার্যক্রম চলবে না বন্ধ হবে, সে বিষয়ে শুক্রবার এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছিল। তার দুই দিন আগেই মূল কোম্পানির কাছ থেকে ট্যাবলয়েডটি বন্ধের ঘোষণা এলো। সম্পদ জব্দের কারণে হাতে থাকা সামান্য অর্থ দিয়ে ‘মাত্র কয়েক সপ্তাহ’ স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো সম্ভব বলে সে সময় জানিয়েছিল তারা।
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি পত্রিকা অ্যাপল ডেইলির কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালায় হংকং পুলিশ। জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে হংকংয়ে সংবাদপত্র কার্যালয়ে সেই ছিল প্রথম পুলিশি অভিযান। ঐ দিন পুলিশের ৫০০ সদস্য পত্রিকাটির বার্তাকক্ষে প্রবেশ করে। তারা সাংবাদিকদের কম্পিউটার ও নোটবুক তল্লাশি করে এবং পাঁচ জন নির্বাহী কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে। বার্তাকক্ষের কম্পিউটারগুলোর সামনেও পুলিশ কর্মকর্তাদের বসে থাকতে দেখা যায়। এই অভিযান হংকংয়ের গণমাধ্যমের প্রভাবশালী ধনকুবের জিমি লাইয়ের ওপর আরেকটি বড় আঘাত, যিনি অ্যাপল ডেইলি ট্যাবলয়েডের মালিক এবং বেইজিংয়ের নীতির একজন কড়া সমালোচক। চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং বেআইনি সমাবেশে অংশ নেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে এখন তিনি কারাভোগ করছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সাংবাদিকদের ফোনসেট ও কম্পিউটার থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে ঐ অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশের অভিযোগ, ২০১৯ সাল থেকে এই ট্যাবলয়েডটি ডজনখানেকের বেশি প্রতিবেদন ছেপেছে, যা হংকংয়ের নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে। তবে সবশেষ প্রতিবেদন কবে ছাপা হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি তারা।
ইত্তেফাক/এএইচপি