শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যেভাবে আফগানিস্তানের অর্ধেক এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিলো তালেবান

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ০২:২৫

মার্কিন বাহিনী ও সামরিক জোট ন্যাটোর অধিকাংশ সৈন্য ইতিমধ্যে আফগানিস্তান ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন। এই সুযোগে দীর্ঘ ২০ বছর পর আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তালেবান। এরই মধ্যে আফগানিস্তানের অর্ধেক এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে তারা। মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময়ের ব্যবধানে আফগান সরকারি বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করতে সক্ষম হয়েছে গোষ্ঠীটি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই মাসে আফগানিস্তানের অনেক এলাকা তালেবানরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। যা ২০০১ সালে পর যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।

বিবিসির আফগান সার্ভিসের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গজনি, মাইদান ওয়ার্দাকসহ আফগানিস্তানের অনেক এলাকাজুড়েই এখন তালেবান যোদ্ধাদের সরব উপস্থিতি। এছাড়া কুন্দুজ, হেরাত, কান্দাহার ও লস্কর গাহসহ আরও কয়েকটি শহরের কাছে তাদের উপস্থিতি বাড়ছে। কোনো এলাকা নিয়ন্ত্রণ নেওয়া মানে সেখানকার প্রশাসনিক কেন্দ্র, পুলিশ দফতর ও সরকারের সব প্রতিষ্ঠান তালেবানদের দখলে যাওয়া।

অভিযোগ রয়েছে, ওসামা বিন লাদেনসহ জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার শীর্ষ নেতাদের আশ্রয় দিয়েছিল তালেবান। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদা কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার জের ধরেই আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে মার্কিন বাহিনী। সে বছরই ক্ষমতাচ্যুত হয় তালেবান।

এরপর থেকেই আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক মহলের উপস্থিতি বাড়ে। মার্কিন বাহিনী ও ন্যাটোর সৈন্যরা আফগান সরকারি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এর মাঝেও ধীরে ধীরে প্রত্যন্ত এলাকায় তালেবানরা নিজেদের শক্তি বাড়ানো ও সংগঠিত হতে শুরু করে।

দেশটির দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম-উত্তরাঞ্চলের হেলমান্দ, কান্দাহার, উরুজগান, জাবুল প্রদেশ এবং দক্ষিণাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা ফারিয়াব ও বাদাখশানে গোষ্ঠীটির অবস্থান আগে থেকেই শক্তিশালী। আফগানিস্তানের আরও অনেক এলাকায় তালেবানরা সক্রিয়। সাম্প্রতিক হামলাগুলো সেটিরই ইঙ্গিত দেয়।

বর্তমানে কেবল হামলা নয়, নতুন নতুন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে তালেবান। ফলে ওইসব এলাকা থেকে পালাচ্ছে আফগান সরকারি বাহিনী। অঞ্চলগুলোতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। আবার কিছু কিছু এলাকার দখল পুনরায় নিতে পেরেছে আফগান বাহিনী। কয়েকটি এলাকায় এখনো লড়াই চলছে। যা উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলো মূলত সমতলে ও নদীতীরবর্তী স্থানে অবস্থিত। সেখানে জনসংখ্যাও বেশি। আর তালেবানদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় মানুষের বসবাস কম।

গত দুই মাসে দেশটিতে ব্যাপক সহিংসতা বেড়েছে। অসংখ্য বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে আফগানিস্তানে বিভিন্ন সহিংসতায় রেকর্ড ১ হাজার ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ইত্তেফাক/টিএ