শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিমানে উড্ডয়ন ভীতি কমানোর উপায়

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০১৯, ০৩:০০

বিমানে ওঠার ক্ষেত্রে অনেক মানুষই ভয় পান। অনেকের হাতের তালু ঘামতে থাকে, বিমান টেক অফ করার সময় অনেকে বিমানের আসনের হাতল শক্ত করে আঁকড়ে ধরেন। আবার ল্যান্ড করার সময়ও কারো হূদকম্প বেড়ে যায়। বোয়িং এর জরিপ অনুযায়ী, ১৭ শতাংশ মার্কিনী উড্ডয়নে ভয় পান। তবে বিমানে উড্ডয়ন নিয়ে মানুষের এই ভীতি কাটানোর কিছু উপায় নিশ্চয়ই আছে। ভয় কাটানোর জন্য মনোবিজ্ঞানীরা কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

বিমান দুর্ঘটনার পরপরই সাধারণত উড্ডয়ন নিয়ে মানুষের মধ্যে এই ধরনের ভীতি বেশি তৈরি হয়। এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক বা এএসএন এর তথ্য অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে ৩৭ কোটি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এর মধ্যে প্রতি ২৫ লাখ ২০ হাজার ফ্লাইটে ১টি বিমান হয়তো দুর্ঘটনার শিকার হয়। মূলত বিমান দুর্ঘটনা হলে সেটি গণমাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রচার করে তাই এই নিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতির মাত্রা বেশি হয়।

উড্ডয়ন ভীতি কাটানোর একটি বড় উপায় শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম। এমন অনেকে রয়েছেন যারা আগে বিমানে ওঠেনি বা আগে কোনো বাজে অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছেন তারা উড্ডয়নে ভয় পান। ইউনিভার্সিটি অব ভার্মন্ট এর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ম্যাথিউ প্রাইস বলেন, কেন একজন মানুষ এধরনের ভীতিতে আক্রান্ত হবেন এই নিয়ে একটা ব্যাখ্যাও নেই। তবে এই নিয়ে বহু কারণ রয়েছে। এটা হয়তো বিমান বিধ্বস্ত হওয়া সম্পর্কে জানা বা বিমানে উঠলে বদ্ধ একটা পরিবেশে বন্দী থাকার জন্য হতে পারে। উড্ডয়ন ভীতি কাটানোর জন্য তিনি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছেন। উড্ডয়নের সময় অনেকে কানে হেডফোন গুজে রাখেন, কেউ দুশ্চিন্তা প্রতিরোধী ওষুধ নেন আবার কেউ ধ্যানের মাধ্যমে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। কেউ-কেউ অবশ্য অ্যালকোহলও পান করেন।

কিন্তু ভীতির মাত্রা অনেক বেশি হলে কিছু থেরাপির দ্বারস্থ হওয়া উচিত। উড্ডয়নের ভীতি দূর করার জন্য হিপনোথেরাপি, সাইকোথেরাপি বা কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি ব্যবহার করা হয়। ভীতি জয় করার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা যে পরামর্শটি দেন সেটি হচ্ছে, যে বিষয়টিকে আপনি ভয় করেন সেই কাজটি করার মাধ্যমে ভয় কাটানোর চেষ্টা করা। ভীতি কাটানোর জন্য নানান পদ্ধতির মধ্যে একটি হচ্ছে বিশেষ কোর্সে ভর্তি হওয়া। যেমন: ‘ফ্লায়িং উইদাউট ফিয়ার’। এই কোর্সে প্রশিক্ষিত পাইলট নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর দেন। কেন ভয় পাওয়া যৌক্তিক নয় সে বিষয়েও বিভিন্ন তথ্য তারা তুলে ধরেন। এছাড়া যারা অযৌক্তিকভাবে চিন্তা করতে থাকেন যে, এই বুঝি প্লেন ক্র্যাশ হতে চললো - তাদের এই প্রশিক্ষণের প্রথম সেশনে দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণের কলা-কৌশল শেখানো হয়।

আরও পড়ুন: মার্কিন সৈন্যরা ‘মোটা’, চীনারা ‘হস্তমৈথুনে আসক্ত’

বিমানে উড্ডয়ন ভীতি যাদের বেশি তাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই তথ্যটি জানা খুবই দরকারি। সংস্থাটির দেয়া তথ্য মতে, ২০১৩ সালে সারা দুনিয়ায় ১০ লাখ ২৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। আর সার্বিকভাবে গাড়িতে ভ্রমণের ঝুঁকি বিমানের চেয়ে শতগুণ বেশি। এছাড়া বর্তমানে মানুষের ক্যান্সার ও হার্টের অসুখে মৃত্যুর আশঙ্কাও অনেক বেশি। -বিবিসি

ইত্তেফাক/আরকেজি