যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতি তিন মিনিটে একটি করে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। অর্থাত্ এই লেখাটা পড়তে যতটা সময় লাগে সেই সময়েই একবার কেঁপে উঠেছে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া। সম্প্রতি ‘সাইন্স’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
যদিও ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প কোনো বিরল ঘটনা নয়। এই অঞ্চলে সর্বদা ‘টেকটোনিক’ প্লেটের ধীর সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। প্যাসিফিক প্লেটের সঙ্গে নর্থ আমেরিকান প্লেটের মধ্যে চলে এই সংঘর্ষ। আর এই সংঘর্ষ থেকে উদগীরণ হওয়া শক্তি থেকেই উত্পত্তি হয় ভূমিকম্পের। ভূমিকম্প যাচাই বিষয়ক সিসমিক জরিপে দেখা গেছে, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৮ লাখ দশ হাজারের বেশি বার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। অর্থাত্ প্রতি তিন মিনিটে একবার করে কেঁপেছে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার মাটি। বিজ্ঞানীদের পূর্বের অনুমানের চেয়ে যা অনেক বেশি প্রতীয়মান হয়েছে। তবে এসব ভূমিকম্পের বেশিরভাগই খুবই দুর্বল প্রকৃতির ছিল যা কিনা মানুষ অনুভব করার মতো নয়।
গবেষণা দলের প্রধান ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক জ্যাসারি রস বলেন, সিসমোলোজির সহায়তায় আমরা ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের সঠিক তথ্য পাই এবং কিছু ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের আগাম সংকেতও পেতে পারি। গবেষণায় ভূমিকম্পের যেসব উপাত্ত উঠে এসেছে সেগুলো এখন বিশ্লেষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। বিপুল সংখ্যক এই ভূমিকম্পের মধ্যে বড় ভূমিকম্পের সংখ্যা খুবই কম। ফলে কত সংখ্যক ভূমিকম্পের পর এক একটি বড় ভূমিকম্প সংগঠিত হয় সে সম্পর্কেও একটি ধারণা লাভ করা সম্ভব। এসব ভূমিকম্পের ধরন এবং ছোট-বড় ভূমিকম্পের সম্পর্ক বুঝতে সহজ হবে।
মার্কিন ভূতত্ত্ব জরিপের কর্মকর্তা ড্যাভিড শেলি বলেন, এই তথ্য আমাদের সামনে নতুন দিগন্তের দ্বার খুলে দিয়েছে। মহাকাশের গ্রহ, নক্ষত্রকে একেবারে পরিষ্কারভাবে দেখার জন্য যেমন উন্নতমানের টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয় এই তথ্য তেমনই উন্নত টেলিস্কোপের কাজ করবে।-ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক