গুজরাটে ২০০২ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানোকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তার হাতে টাকা তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাকে সরকারি চাকরি এবং বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গুজরাট সরকারকে।
মার্চ মাসে মামলার শুনানি চলাকালে বিলকিস বানোকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিয়েছিল গুজরাট সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বিলকিস। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘দোষীদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু চরম উন্মত্ততার সাক্ষী থাকা বিলকিস বানোকে ছেড়ে দেওয়া হয় রাস্তায়।’
আদালত আরও বলে, ‘২১ বছরের বিলকিসকে শুধুমাত্র ২২ বার ধর্ষণই করা হয়নি, নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল তার তিন বছর দুই মাসের মেয়েকেও। তার পর থেকেই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বিলকিস। এখন তার ৪০ বছর বয়স। তার পরিবারের আর কেউ বেঁচে নেই। পড়াশোনাও তেমন জানেন না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দয়ায় বেঁচে রয়েছেন।’
আরও পড়ুন : দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে ঢাকা কলেজের তিন শিক্ষার্থী
রাজ্যের বেশ কিছু পুলিশ অফিসার তদন্ত ভিন্ন পথে চালিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে এর আগে বোম্বে হাইকোর্টে অভিযোগ করেছিলেন বিলকিস বানো। ২০০৮ সালে সেখানে ১১ জন দোষী সাব্যস্ত হলেও, ওই পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এ দিন বিলকিস বানোর আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন অবসর নিয়েছেন। পঞ্চম জন, আইপিএস অফিসার আরএস ভাগোরা অবসর নেয়ার পথে। অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে গুজরাট সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদনও চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওই দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্য মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ইত্তেফাক/কেআই