ভারতের ঝাড়খণ্ডে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক কলেজ ছাত্রীকে পাঁচটি কোরআন শরীফ কিনে একটি ইসলামিক সংগঠনে গিয়ে তা বিলি করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের একটি আদালত। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ওই কলেজ ছাত্রীর নাম রিচা প্যাটেল। রিচার একটি ফেসবুক পোস্ট মুসলিমদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হেনেছে - এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে জামিনের শর্ত হিসাবে কোরআন শরীফ বিলি করার নির্দেশ দেয় আদালত।
প্যাটেল বিবিসিকে বলেন, ‘একটা ফেসবুক পোস্টের জন্য অন্য ধর্মের একটি সংগঠনে গিয়ে কোরআন বিলি করার নির্দেশে আমার খুবই অস্বস্তি হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আদালতের নির্দেশকে সম্মান জানিয়েও বলতে বাধ্য হচ্ছি, এটা তো আমার মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে! আমি উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি।’
এছাড়া তিনি দাবি করেন, যে ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার জন্য পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল, সেটা তিনি 'নরেন্দ্র মোদী ফ্যানস ক্লাব' নামের একটা গ্রুপ থেকে কপি করেছিলেন। সেই পোস্টে কোন ইসলাম-বিরোধী কথা ছিল না বলেও দাবি প্যাটেলের।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলমানদের সামাজিক সংগঠন 'আঞ্জুমান ইসলামিয়া'-র প্রধান মনসুর খলিফা থানায় রিচা প্যাটেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
তার অভিযোগ, রিচা প্যাটেলের ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপ পোস্টের ফলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের 'অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে'।
এরপর অভিযোগ পেয়ে ১২ই জুলাই (শুক্রবার) সন্ধ্যায় রিচা প্যাটেলকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে প্যাটেলকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি সহ নানা এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করে।
ওদিকে আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হয়। রাঁচি সিভিল আদালতে জামিনের শর্ত হিসাবে বিচারক জানান, রিচাকে পাঁচটি কোরআন কিনে আঞ্জুমান কমিটি আর গ্রন্থাগারে বিলি করতে হবে, আর সেই প্রাপ্তি স্বীকারের রসিদ আদালতে জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুন: সিংহ মেরে দম্পতির চুম্বন, সমালোচনার ঝড়
এই রায় নিয়ে বিজেপির এক নেতা প্রতুল সহদেব বলেন, ‘এটি একটি আজব রায়। ভারতের ইতিহাসে এমন রায় আমি আগে কখনো শুনিনি।’ তথ্য সূত্র: এনডিটিভি, ফার্স্ট পোস্ট।
ইত্তেফাক/এসআর