বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যেভাবে চীনের দুই দ্বীপের মশা নির্মূল হলো

আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৯, ০৮:২৩

ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী নানা রোগের বাহক মশা। সামান্য মশার কামড়ে ঘটতে পারে মারাত্মক বিপদ। এ কারণে মশা নিয়ে মানুষের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। মশা নিধনে নানা ধরনের কার্যক্রম হাতে নিয়েও অনেক সময় পুরোপুরি সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এবার চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডোঙ এর দুটি দ্বীপ থেকে মশা নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ গবেষণা সাময়িকী ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

 

 

গুয়াংডোঙ থেকে নির্মূল করা মশার প্রজাতির নাম এশিয়ান টাইগার। এই প্রজাতির মশাকে বিশ্বের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক মশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধারণত নারী মশার কামড়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। তবে নতুন উপায়ে এশিয়ান টাইগার প্রজাতির নারী মশার সংখ্যা ৯৪ শতাংশ পর্যন্ত নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে মশার কামড় কমেছে ৯৭ শতাংশ। মূলত কৃত্রিম উপায়ে মশার বংশবিস্তার রোধ করার মাধ্যমে মশা নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা।

 

চীনের ঐ দুটি দ্বীপ থেকে মশা নির্মূল করার এ প্রকল্পের একজন মুখ্য গবেষক জি ঝিয়োঙ। মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মশার বংশবিস্তার রোধের উপায় খোঁজার কাজ করেছেন। নতুন গবেষণায় জি ও তার সহকর্মীরা নারী ও পুরুষ উভয় মশার বংশবিস্তার ক্ষমতা সীমিত করার চেষ্টা করেন। সীমিত পরিসরের রেডিয়েশনের মাধ্যমে নারী মশাকে বন্ধ্যা করা হয়। আর পুরুষদের ওলব্যাখিয়া ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত করা হয়। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে চীনের ঐ দুটি দ্বীপে এসব মশাকে ছাড়া হয়। ধীরে ধীরে নারী মশার সংখ্যা একেবারে শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছায়।

আরো পড়ুন : ছেলেধরা সন্দেহে অভিভাবককে গণপিটুনি: ৫শ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

এর আগে ২০১৮ সালে ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের বিজ্ঞানীরা জিন সম্পাদনা করে নারী মশাকে বন্ধ্যা করেছিলেন। আর পুরুষকে স্বাভাবিক রাখা হয়। এ অবস্থায় তাদের মধ্যে মিলন ঘটলেও বংশবিস্তার রোধ করা সম্ভব হয়। বর্তমানে জি ঝিয়োঙ চীনে একটি মশার ফ্যাক্টরি পরিচালনা করছেন, যেখানে তিনি ক্ষতিকর মশাদের দমনের জন্য কৃত্রিম মশা উত্পাদন করেন। এর আগে তিনি পুরুষ মশাকে প্রজনন অক্ষম করার প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। পুরুষ মশাকে প্রজননে অক্ষম করার মাধ্যমে তিনি মশার বংশবিস্তার রোধের প্রচেষ্টা চালান। মশা নিধনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ২০১৬ সালে জি ঝিয়োঙ গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আমরা এমন কিছু ভালো মশা তৈরির কাজ করছি যেগুলো খারাপ মশার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের সাহায্য করতে পারবে।-সিএনএন

 

ইত্তেফাক/ইউবি