শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফেসবুকের দেওয়া তথ্যে যুবকের আত্মহত্যা ঠেকালো পুলিশ

আপডেট : ২৩ জুলাই ২০১৯, ১৬:২২

ফেসবুক লাইভ করে, স্ট্যাটাস কিংবা ভিডিও আপলোড করে আত্মহত্যার বিষয় নতুন নয়। এই ধরনের ঘটানাগুলো অহরহই ঘটছে। সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তাসহ পোস্ট দিয়ে নিজেকে শেষ করে ফেলার কথা জানিয়েছিলেন এক যুবক। আর সেই ‘পোস্ট’ই বাঁচিয়ে দিল তার জীবন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে ওই যুবক ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেন। সেই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি।’ তাদের প্ল্যাটফর্মে পোস্ট হওয়া এই সংক্রান্ত বিষয়ের ওপরেই নজর রাখে ফেসবুক। এই ধরনের একটি পোস্ট দেখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইমেল করে তারা লালবাজারকে জানায়, কলকাতার এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের ওয়ালে আত্মহত্যার বার্তাসহ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ওই যুবকের ফেসবুক প্রোফাইলসহ কিছু তথ্য তারা কলকাতা পুলিশকে দেন। এর পরেই তৎপর হয় কলকাতা পুলিশ।

সাইবার সেলের গোয়েন্দারা ফেসবুকের দেওয়া তথ্য এবং ওই যুবকের প্রোফাইল ঘেঁটে পোস্টটি কোন মোবাইল থেকে করা হয়েছে, তা খুঁজে বরে করেন। এরপর সেই মোবাইলের আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে যুবকের ফোনের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করেন। দেখা যায়, ওই যুবকের মোবাইল লোকেশন সেই মুহূর্তে কসবা থানা এলাকার পিকনিক গার্ডেন। সঙ্গে সঙ্গে লালবাজার থেকে যোগাযোগ করা হয় কসবা থানার সঙ্গে। খবর পেয়ে থানার ওসি পৌঁছন ওই যুবকের মোবাইল লোকেশন যেখানে দেখাচ্ছে, সেই জায়গায়। যদিও সেই লোকেশন কোনও বাড়ির ঠিকানা নয়। এরপর ওই যুবকের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা কথা বলেন। কথা হয়, তাদের সঙ্গে থাকা মনোবিদদের সঙ্গেও।

আরো পড়ুন: মায়ের সঙ্গে সালমানের নাচের ভিডিও ভাইরাল

জানা গেছে, ওই যুবক বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন। ব্যক্তিগত বিভিন্ন কারণের পাশাপাশি ওই যুবকের পারিবারিক সমস্যাও রয়েছে। মাঝে কয়েক দিন বাড়ি ছেড়ে চলেও গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে ওই যুবককে বুঝিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ। কী কারণে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ওই যুবক, সে ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানায়নি।

সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটির উপর ফেসবুক ইউজার আছে। সবার ফেসবুক প্রোফাইলের উপর নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। ফেসবুকের একটি আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) এবং ডেটা অ্যানালিসিস সিস্টেম আছে। কেউ যদি আত্মহত্যা শব্দটি লেখেন বা ওই সংক্রান্ত কোনও অডিও অথবা ভিডিও আপলোড করেন, তাহলে সেটা সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের নজরে চলে আসে।’ 

আরো পড়ুন: মিন্নির জামিন চেয়ে পুনরায় আবেদন শুনানী আগামী ৩০ জুলাই

তিনি আরো জানান, বিশ্বজুড়ে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে ফেসবুক বিষটিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এভাবেই ফেসবুকের নজরে পড়ে বিষয়টি। এবং সঙ্গে সঙ্গে তা লালবাজারকে জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর বলেন, ‘এটা আমাদের কর্তব্য। একজন মানুষের প্রাণ বাঁচানো গেছে। ওই ব্যক্তির প্রাইভেসির কারণে এর থেকে বেশি আমরা কিছু জানাতে চাইছি না।’

ইত্তেফাক/বিএএফ