বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জ্বালানি পরিবহন চালকদের ধর্মঘট, স্থবির পর্তুগালের পরিবহন খাত

আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০১৯, ১২:১৩

বেতন ও আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে জ্বালানি বহনকারী লড়ি চালক ও জ্বালানি শোধনাগার কর্মীদের টানা অবরোধে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে পর্তুগালের পরিবহন খাত। 

 

সোমবার থেকে শুরু হওয়া পাঁচদিনের টানা এই অবরোধকে এরইমধ্যে ' ন্যাশনাল এনার্জি ক্রাইসিস' বলে ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। জনসাধারণের দুর্ভোগ বিবেচনায় দ্রুত এই অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী এ্যান্তোনিও কস্তা। 

 

শুক্রবার পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আলোচনার মাধ্যমে এই অচলাবস্থা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও মালিক পক্ষের সংগঠন এএনটিআরএএম-এর  থেকে কোনো প্রকার আশ্বাস পায়নি চালক শ্রমিক ফেডারেশন। 

 

পর্তুগালের জ্বালানি শ্রমিক ফেডারেশনের মুখপাত্র পেদ্রো হেনরিকস সর্বশেষ জানিয়েছেন, রবিবার সরকার ও মালিক পক্ষের সাথে তাদের আরেক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। শ্রমিক, চালকরা সেই বৈঠকের ফলের দিকে তাকিয়ে আছেন এবং বৈঠক পরবর্তী সময়ে আগামী দিনের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে তারা। সমঝোতার আশায় শনিবার তাদের অবরোধ কিছুটা শিথিল ছিল।

 

তবে রবিবারের বৈঠকের ব্যাপারে মালিক পক্ষ থেকে এখনো কোনো বার্তা পাওয়া যায়নি। মালিক পক্ষের সংগঠনের মুখপাত্র আন্দ্রে মাটিয়াস শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে শ্রমিকদের করা দাবি মালিকপক্ষের মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তিনি জানান এমন দাবি মেনে নিতে অর্থনৈতিকভাবে মালিক পক্ষ সক্ষম নয়।

 

সরকারের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ৫০০ ড্রাইভার দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার উদ্যোগ নেয়া হয় কিন্তু দেশের মোট চাহিদার সাথে এই লোকবল পর্যাপ্ত নয়।

 

বেশ কয়েকবার সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় গেল বুধবার সরকার অবশ্য চালকদের বিরুদ্ধে কঠোরতার হুঁশিয়ারি করেন। সেক্ষেত্রে কাজে না ফিরলে এবং আন্দোলন চালিয়ে গেলে চালকদের দুই বছরের জেল সাথে জরিমানা করার মতো সিধ্বান্তে যেতে পারে সরকার।

তবে বাস চালকদের দাবি তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লরি চালান তাই তাদের দাবিদাওয়া গুলো সরকার ও মালিকপক্ষ দ্রুত মেনে নিবে। হুমকি দিলেও তাদের অবরোধ বন্ধ হবে না।

 

এদিকে অবরোধের কারণে পর্তুগালের অনেক গাড়ি চালকরা স্পেন থেকে তেল সংগ্রহ করছেন। কিন্তু টানা পাঁচদিনের অবরোধে স্পেন সীমান্তের তেল পাম্পগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল সংগ্রহ করার কারণে সে সব পাম্পগুলোতেও সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্পেনের পরিবহন সংস্থা।

আরো পড়ুন : ‘বেলুচিস্তানে গুম, খুন ও নির্যাতন চালাচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী’

 

এদিকে জ্বালানি পরিবহন চালকদের টানা এই অবরোধে বিমানবন্দরে বেশ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে, বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ইত্যিমধ্যেই তাদের অভ্যন্তরীণ যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পর্তুগালের এটি পর্যটন মৌসুম হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের হিমশিমে পড়তে হচ্ছে বিমানবন্দরকে।  

 

ধর্মঘটের কারণে লিসবন শহরের অদূরে অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিসগুলোর সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। সেই চাপ মোকাবিলায় স্কোটুর্ব বাস কোম্পানি শনিবারে লিসবনের জেলার অন্তর্গত শহর সিন্ত্রা, কাসকাইস, এবং ওয়েরাসে বিশেষ বাস চালুর ব্যবস্থা করে।

 

 

জ্বালানি পরিবহণ চালক, শ্রমিকদের ডাকা এই অবরোধে পর্তুগালে জ্বালানি খাতে নেমে এসেছে স্থবিরতা। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যাহত হচ্ছে লিসবন এয়ারপোর্টের অভ্যন্তরীন সেবা। শ্রমিক ফেডারেশন, মালিক পক্ষ মধ্যে সমঝোতা করতে সরকারের উদ্যোগ থাকলেও এখনো পর্যন্ত সেটির সম্ভাবনা কম। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে নারাজ ফলে ব্যাহত হচ্ছে পর্তুগালের নগর জীবন।

 

ইত্তেফাক/ইউবি