'ইয়ে স্রেফ ট্রেইলার থা, পিকচার আভি বাকি হ্যায়' (এটা শুধু ট্রেইলার ছিলো, সিনেমা এখনও বাকি আছে!)। 'ওম শান্তি ওম' সিনেমায় শাহরুখ খানের মাতাল অবস্থায় দেওয়া এই ডায়লগে অনেকদিন মেতে ছিলো পুরো উপমহাদেশ। সামনে বিশেষ কিছু আছে, বোঝাতে গেলেই চোখে মুখে রহস্য এঁকে অনেকেই বলে ওঠেন, 'পিকচার আভি বাকি হ্যায়।'
সরকারের ১০০ দিন পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী মোদিও জনগণের জন্য ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়ে শাহরুখের ডায়লগেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন।
ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'নির্বাচনের আগে, আমি একটি শক্তিশালী এবং কর্মমুখী সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম... একটা সরকার, যা আগের থেকে আরও গতিশীল, যে সরকার আপনাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য লড়াই করবে। আমাদের সরকারের ১০০ দিন শুধুমাত্র একটি ট্রেলার ছিল, পুরো সিনেমা আসতে এখনও বাকি আছে।'
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে বিতর্কিত কিছু বিল কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাশ করিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল, তথ্য জানার অধিকার আইনের (সংশোধনী) বিল উল্লেখযোগ্য। ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, পাশাপাশি রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে। সর্বশেষ নতুন করে নাগরিকপঞ্জী তালিকা করে বহিরাগতদের দেশ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার।
প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, সমস্ত ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন এবং যারা দেশকে লুট করেছে তাদের শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর তার সরকার। তিনি বলেন, 'উন্নয়ন আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং লক্ষ্যও বটে। দেশ এর আগে কখনও উন্নয়নের এত দ্রুত গতি দেখেনি।' তাঁর কথায়, 'একই সময়ে, দুর্নীতির ওপর আঘাত শুরু হয়েছে। যারা মানুষকে লুটের চেষ্টা করেছে তাদের সঠিক জায়গায় পাঠানো হবে।'
তবে ১০০ দিনে বিজেপির কার্যকলাপকে অন্যভাবেই দেখছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'বিজেপির দ্বীতিয় দফা সরকারের প্রথম ১০০ দিনকে তিনটি শব্দে বর্ণনা করা যায়: স্বৈরাচারিতা, বিশৃ্ঙ্খলা এবং নৈরাজ্য।' দেশের শিল্পক্ষেত্রে অবনমন এবং যেভাবে দেশের প্রবৃদ্ধির হার প্রথম তিনমাসে যেভাবে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে, তা নিয়েও সমালোচনা করে কংগ্রেস।
দলটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, 'রেকর্ডভাবে ২ শতাংশের নিচে বৃদ্ধি নেমেছে ৮টি ক্ষেত্রে এবং আমাদের অর্থমন্ত্রী এখনও মানছেন না যে, আমাদের অর্থনীতি অবাধে নামছে। যদি বিজেপি এভাবে উপেক্ষা এবং কৌশল চালাতে থাকে, তাহলে আমরা মন্দার দিকে এগিয়ে যাব।'
এছাড়া বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। কয়েক সপ্তাহ আগেই, আর্থিক কেলেংকারির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম এবং ডিকে শিবকুমারকে। সে প্রসঙ্গেই বিজেপির বিরুদ্ধে, সিবিআই ও এনফোর্মসেন্ট ডিরেক্টরেটের মতো সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী নেতাদের টার্গেট করার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
জম্মু কাশ্মীরের সায়ত্বশাসন অধিগ্রহণ ও নাগরিকপঞ্জী থেকে লাখো নাগরিকদের নাম প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে বেশ চাপে আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানেই জঙ্গিবাদের প্রধান শেকড় : মোদি
এদিকে রবিবার হরিয়ানার রোহতাকে একই দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেন, 'গত ১০০ দিনে, যে সমস্ত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার অনুপ্রেরণা ১৩০ কোটি দেশবাসী।'
ইত্তেফাক/মিশু