শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

সংবিধানে স্বাস্থ্যকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে

আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২০, ২২:০৫

ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তারা

ইত্তেফাক রিপোর্ট

সংবিধানে জনগণের স্বাস্থ্যকে কেবল মৌলিক চাহিদা নয়, বরং পূর্ণ মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর জাতীয় অর্জনের দিকে ফিরে তাকাতে হবে, সত্যিই মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি—গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়বাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা অর্জন করতে পেরেছি কি না। গতকাল বুধবার ‘উত্তম স্বাস্থ্য :মানবাধিকারের জন্য লড়াই’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় রোকেয়া দিবস ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে বিডিসিএসও প্রসেস (যা দেশব্যাপী প্রায় ৭০০ বেসরকারি সংস্থা ও নাগরিক সংগঠনের একটি ফোরাম) ও কোস্ট ট্রাস্ট যৌথভাবে এই ভার্চুয়াল সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারী পক্ষের শিরীন হক তার বক্তব্যে বলেন, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য খাতে এই কোভিড মহামারির সময়ে মুনাফার লোভ ও দুর্নীতি এত পরিমাণে বেড়েছে যে সরকারি ও প্রাইভেট উভয় খাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, ‘আমাদের সংবিধানে স্বাস্থ্যকে শুধু মৌলিক চাহিদা হিসেবে উল্লেখ করা আছে। একে সংবিধানে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।’

সভাপ্রধানের বক্তব্যে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, যে জাতি মানুষের মুক্তি ও অধিকারের জন্য নিজের জীবন দিয়ে যুদ্ধ করল, সেই জাতি আবার কী করে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও প্রান্তিক মানুষের জমি দখল এবং তাদের অধিকার হরণের সময় নীরব থাকে? এটি অত্যন্ত লজ্জার।

কুমিল্লার দর্পণের বাসন্তী সাহা বলেন, মতামত প্রকাশের অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের জন্য একটি বড় বাধা।

এডাবের এ কে এম জসিম উদ্দীন বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমাদের নানা সংকট থাকার পরও এত বিশালসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আমরা আশ্রয় ও নিরাপত্তা দিয়েছি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তাদের দায়িত্ব বলতে গেলে কিছুই পালন করেনি, তবু তারা রোহিঙ্গা বিষয়ে সরকারকে দোষারোপ করছে এবং সরকারের উদারতার ভুল ব্যাখ্যা করছে।’

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের বরিশালের ব্যুরোপ্রধান জহিরুল ইসলাম জুয়েল মত্স্যজীবীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, সরকারের মত্স্য সম্পদ বাড়ানোর নীতি দরিদ্র জেলেদের সারা জীবনের সম্পদ জাল ও নৌকা ধ্বংস করে দিয়ে তাদের আরো দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সুশীল সমাজের অংশ হিসেবে এনজিওগুলোকে আর শুধু সেবা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না; নাগরিক অধিকার ও দাবি আদায়ের ব্যাপারে তাদের উচ্চকণ্ঠ হতে হবে। সমাজের পরিবর্তনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য তাদের জায়গা তৈরি করতে হবে। তবে এজন্য তাদের নিজেদেরই আগে পরিবর্তন করতে হবে।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বিডিসিএসও প্রসেসের রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রুলফাও রাজশাহীর আফজাল হোসাইন, বিএনএনআরসির এএইচএম বজলুর রহমান, সিডস রংপুরের সারথী সাহা, রংপুরের মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, বরিশালের আইসিডিএর আনোয়ার জাহিদ এবং কোস্ট ট্রাস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দ।