এ বছর করোনার কারণে স্কুলগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণীর বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। তবে কিছু শ্রেণিতে পরীক্ষা হবে। বছরের শেষের দিকে সব অভিভাবকই সন্তানদের বেশি চাপ দিয়ে থাকেন পড়াশোনার বিষয়ে। অমনোযোগী হলেই শাসনের নামে অযথা বকাঝকা, রাগারাগি, আঘাত, উচ্চস্বরে ধমকানি বা চেঁচামেচি করে থাকেন, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শিশুর মনের উপর।
অনেক অভিভাবকই মনে করেন, বকুনিই একমাত্র পথ বাচ্চাদের পড়ায় মনযোগী করতে। নিজের রাগ-বিরক্তি সন্তানের উপর উগরে দিয়ে তারা এক ধরণের তৃপ্তি বোধ করেন। পড়াশোনার জন্য প্রতিদিন বকুনি দিলে শিশুরা বিষন্ন হয়ে পড়ে। কারণ অধিকাংশ শিশুরা নিজেদের মানসিক চাপের কথা সব সময় বলতে পারে না। শিশুর আচরণে ক্ষতিকর পরিবর্তন আসে, যা ভবিষ্যতের জন্য খুব খারাপ।
ক্ষতিকর দিকগুলো কী কী
- আত্মবিশ্বাস হারাতে পারে শিশুটি। যেকোনো কাজ করতে গেলেই ভয় পেতে পারে সে। অতিরিক্ত বেখেয়ালি হয় যায় অনেকে। প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েও পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রে সে কোনো সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা বোধ করে।
- অহেতুক ভয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাচ্চাদের কথা বলাও কমে যায় অনেক সময়ে। নিজের মতোই থাকে এমন বহু শিশু। এর ফলে পরবর্তীকালে একাকিত্বেও ভুগতে পারে আপনার সন্তান।
সন্তানকে পড়াশোনায় মনযোগী করার কৌশল
- প্রথমেই পড়ার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করুন। শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ কাম্য। পড়ার স্থানটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। যে সব বাচ্চাদের বয়স কম, ৬-৭ বছরের মধ্যে তাদের কিন্তু পাঠ্য বইয়ের পড়া পড়ানোর চেয়ে মানসিক শিক্ষা ও বিকাশের প্রয়োজন অনেক বেশি। তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা, সুস্থ স্বাভাবিক বিনোদনমূলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত করুন। পাশপাশি সামাজিকতা ও নৈতিকতা শিক্ষা দিন।
- পাঠ্যবইয়ের পড়াশোনা বাচ্চার উপর চাপিয়ে না দিয়ে বরং তার আনন্দের উৎস হিসেবে দেখান। সে যদি কোনো পড়া মুখস্থ করতে না পারে তাহলে বকাঝকা না করে, তার মনোযোগে পরিবর্তন আনুন। কিছুটা বিরতি দিয়ে কিছু সময় পরে আবার তাকে সহজ সহজ উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করুন।
- পড়াশোনার অমনোযোগিতার কারণগুলো কি কি, খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। যেসব কাজ তাকে পড়া থেকে দূরে রাখছে সেগুলো থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে আনুন। যদি তা টেলিভিশন বা মোবাইল হয়, তাহলে নিয়ম এর মাঝে নিয়ে আসুন। তাকে ছোট ছোট উপহার দিন। দেখবেন মনোযোগী হবে।