রাজধানীর আদাবরের খালার বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে যশোরে বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া তিন বোন খালার সঙ্গে থাকতে চান না। তারা বাবার সঙ্গে থাকতে চান।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এ সব তথ্য জানান।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ৮ থেকে ৯ বছর পর অসুস্থ বাবার সঙ্গে তিন বোনের দেখা হয়। তিন বোনের মধ্যে দুজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। একজন ডিপ্লোমা করছেন। যিনি ডিপ্লোমা করছেন তিনি আদাবরে এক খালার বাসায় থাকতেন। বাকি দুজন খিলগাঁওয়ে আরেক খালার কাছে থাকতেন। এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে তিন বোন আদাবরে বসবাস করা খালার বাসায় আসেন। তাদের কারো ফোন নেই। খালার পরিবারের সদস্যদের মোবাইল থেকে মাঝে মধ্যে যশোরে থাকা দাদির সঙ্গে কথা বলতেন। তবে তাদের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। তিন বোন আদাবরে আসার পর বাবার কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী দাদির সঙ্গে কথা হয়। তাদের কাছে যশোর যাওয়ার জন্য টাকা ছিল না। সেজন্য দাদি বিকাশে ২০০০ টাকা পাঠান। সেই টাকায় তারা গাবতলী থেকে যশোরে যান। তাদের বাবা প্যারালাইজড হয়ে অনেকটা শয্যাশায়ী জীবন যাপন করছেন।
তিন বোনের টিকটকে আসক্তির বিষয়ে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আমরা তাদের কাছ থেকে কোনো মোবাইল ফোন পাইনি। তিন বোনের খালাদের ওপর অনেক ক্ষোভ রয়েছে। শুক্রবার যশোরের হামিদপুর থেকে তিন বোনকে উদ্ধারের পর শনিবার সকালে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। আজ তাদের আদালতে তোলা হবে। তারা কার কাছে থাকতে চান সেই বিষয়ে তাদের বক্তব্য শুনে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।
তিন বোন বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরা লেকসিটি কনকর্ডে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২০১২ সালে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে ডিভোর্স হয়। এক পর্যায়ে তাদের বাবা যশোর চলে যান। কিন্তু তারা মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থেকে যান। ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট তাদের মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তারা খালার বাসায় থাকতেন। খালারা তিন বোনকে তাদের বাবা ও চাচাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিতেন না। এ নিয়ে তিন বোনের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয় খালাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত ব্যবহার না পাওয়া। এসব কারণে কাউকে কিছু না বলে আদাবরে খালার বাসা থেকে তিন বোন যশোর চলে যান। তাদের সন্ধান না পেয়ে এক খালা গত ১৮ নভেম্বর আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এই ডায়েরির তদন্ত করতে গিয়ে তিন বোনকে যশোরের হামিদপুর এলাকায় শনাক্ত করে পুলিশ।