সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কমিশন কমানোর সিদ্ধান্তকে যেভাবে দেখছেন পাঠাও রাইডাররা

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ২১:২৪

দেশীয় বাইক রাইডারদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়ার পরিমাণ কমিয়েছে  শেয়ারিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘পাঠাও’।  এতদিন চালকদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি কমিশন নিতো  ১৫ শতাংশ হারে। আর নতুন নিয়ম অনুযায়ী  নেবে ১০ শতাংশ। এই হার কার্যকর হচ্ছে বুধবার (২৪ নভেম্বর) থেকেই। এই সিদ্ধান্তের ফলে চালকরা ট্রিপের ভাড়া থেকে সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ আয় করতে পারবেন। রাইডাররা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা বলছেন, এতদিন কেউ কেউ বেশি উপার্জনের আশায় অ্যাপস এড়িয়ে মৌখিক চুক্তিতেও ট্রিপ দিতেন। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে মৌখিক চুক্তিতে রাইড শেয়ারিং বন্ধ হবে। বাড়বে অ্যাপেই ট্রিপের পরিমাণ। ইত্তেফাক অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে তারা এমন প্রতিক্রিয়া জানান। 

চাকরির পাশাপাশি দেশীয় রাইড শেয়ার ‘পাঠাও’ অ্যাপসের মাধ্যমে রাইড শেয়ার করতেন শুভ চৌধুরী। অফিসে যাওয়া-আসার পথে কিংবা অবসরে তিনি রাইড শেয়ারিং করতেন।  তবে, সাময়িক এই আয়ের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে কমিশন দিতে হতো পাঠাওকে। তাই অ্যাপের বদলে চুক্তিতে গেলেই আয় বেশি হতো।  

‘পাঠাও’ তার চালকদের কমিশন ১০ শতাংশে কমিয়ে এনেছে; এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ইত্তেফাক অনলাইনকে শুভ চৌধুরী  বলেন, 'পাঠাওর নতুন সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত। এতদিন পাঠাও কমিশন বেশি নেওয়ায় আমরা প্রায় অ্যাপ বন্ধ করে মৌখিক চুক্তিতে ট্রিপ দিয়েছি। কিন্তু আজ থেকে পাঠাও কমিশন কমিয়ে আনায় এখন থেকে অ্যাপেই ট্রিপ করা যাবে।'

সাইফুল ইসলামের একজন চালক ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘নতুন এই নিয়মের কারণে এখন আর কন্টাক্টে যেতে হবে না। কমিশন কমিয়ে দেওয়ায় রাইডাররা নিরাপত্তা পাবেন। যাত্রীরাও সহজেই যেতে পারবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগে নিজেদের আয়ের ২০ শতাংশ বা ২৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে যেতো। এতে করে আমাদের আয় কমে যেতো। তাই অ্যাপের মাধ্যমে না গিয়ে কন্টাক্টেকে করে  যেতো। কন্টাকে গেলে কাউকে তো আর কমিশন দিতে হতো না। আবার ভাড়াও বেশি পাওয়া যেতো। তবে এখন নিরাপত্তার স্বার্থেই অধিকাংশ রাইডাররা এখন আর কন্টাক্টে যাবে না।’ 

রাইডারদের বহু দিনের দাবি পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাসুদ রানা নামের আরেক পাঠাও চালক। ইত্তেফাক অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘মনে মনে দেশের সব রাইডারই চেয়েছিলেন, এমনটা করা হোক। তবে, আমরা চাই এই দিনের একটা সময় না রেখে ১০ শতাংশ কমিশনকেই সর্বজনীন করা হোক।’

মাসুদ আরও বলেন, ‘পাঠাও এই সিদ্ধান্ত একদম সময়োপোযোগী সিদ্ধান্ত। তবে প্রতিষ্ঠানটি যদি এই ১০ শতাংশ কমিশনকে পিক,অফ-পিকের বেড়াজালে না রেখে সবসময়ের জন্য নির্ধারিত করে দেয়, তাহলে রাইডাররা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে হলেও অ্যাপেই রাইড শেয়ার করবে।’ 

কী কারণে কমিশন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো জানতে চাইলে পাঠাও'র সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফাহিম আহমেদ ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘বাইক শেয়ারিং এই মার্কেট লিডার হিসেবে পাঠাও প্ল্যাটফর্মের চালক ও যাত্রীদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে হাজির হচ্ছে। চালকদের আর্থিকভাবে লাভবান করতেই পাঠাও এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য রাইড শেয়ারিং খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীরাও আরও আত্মবিশ্বাসী হবেন।’

ফাহিম আহমেদ আরও বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় কিছু বাড়তি লাভের আশায় বাইক চালকরা অফলাইন ট্রিপ বেছে নেন, যা ঝুঁকিপূর্ণ। কমিশন কমিয়ে আনায় পাঠাওয়ের চালকরা অ্যাপভিত্তিক ট্রিপে আরো বেশি উৎসাহিত হবেন ও অফলাইনে যাত্রী পরিবহন থেকে দূরে থাকবেন।’

ইত্তেফাক/এনই