ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে গানে গানে মুগ্ধতা ছড়ালেন বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। বাংলাদেশের তিন প্রজন্মকে একাই যিনি কখনো প্রেমে, কখনো বিরহে, কখনো বা জীবনমুখী কোনো স্রোতে আবিষ্ট করে রেখেছেন এই কিংবদন্তী। গত ২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের সামনে টানা কয়েকঘণ্টা শোতে বিমোহিত করলেন এই দেশসেরা শিল্পী।
নিজের গানের উপলব্ধি নিয়ে বলেন, ‘ভালো লাগে যখন আজকের ক্ষুদে তরুণরাও আমার গানগুলো মুখস্ত গায়। আমার সঙ্গে সুর মেলায়। জীবনে এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কিছু হতে পারে না।’
উল্লেখ্য, এদেশে আশির দশক থেকে বাংলা গান নিয়ে বাঙালি শ্রোতাদের কানকে সমৃদ্ধ করেছেন এই বরেণ্যশিল্পী।
শিল্পী বলেন, ‘আমার কাছে একটি বিষয় খুব অবাক লাগে যে, আমরা বা আমাদের সমসাময়িক যারা গান করেছি তারা সমকালীন শ্রোতাদের তৈরি করেছি। অনেকরকম বয়সী শ্রোতারাই আমাকে বারবার বলেছে, আমাদের গান শুনেই তারা বড় হয়েছে। এটা কিন্তু বাস্তবতা। অর্থাৎ ওদের বয়সকাল আমাদের গানের সঙ্গেই ভাবাবেগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু একটা আক্ষেপের বিষয় হলো, এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা কিন্তু সমকালীন গান শুনে বড় হচ্ছে না। ওদের মোহমুগ্ধতা অন্যখানে। এগুলো নিয়ে এখনকার মিউজিশিয়ানদের ভাবা উচিত। সিনিয়র শিল্পীদের নামে কান ধরে কাভার করা আর কতকাল? এই বলয় থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অবশ্যই কাভার করবে সবাই। অন্যের গান গাইতে তো মানা নেই। কিন্তু নিজের গান তৈরির তাগিদ থাকতে হবে প্রতিনিয়ত। পরনির্ভরশীলতার আরাম যেন ওদের পেয়ে না বসে।’
নিজের বর্তমান ব্যস্ততা প্রসঙ্গে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘চলতি মাসে টানা শো। যেন সুস্থ থেকে সবার ভালোবাসা কুড়িয়েই চলতে পারি। এটুকুই চাওয়া।’
সম্প্রতি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে নিজের একমাত্র সন্তান নিবিড় পড়াশোনা করছে। ছেলের সঙ্গেও সময় কাটিয়ে এলেন তিনি।
শিল্পী বলেন, ‘ছেলে বড় হচ্ছে। কিন্তু বাবার কাছে কী তার সন্তান কখনো বড় হয়? ও আবার ভীষণ বাবা ভক্ত। আর করোনাকালীন পুরোটা সময় একসঙ্গে এত কাছাকাছি এতটা সময় থেকেছি বলে হঠাত্ এই দূরত্বগুলো খুব কষ্টের।’
নিজের নতুন গান প্রকাশ প্রসঙ্গে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমি তো বরাবরই নতুনদের উত্সাহ দিই। ওরা আমায় ভেবে, আমার রুচির মাপে গান বাঁধলে আমি গাই। ভালো কাজের ব্যাপারে আমার কাছে কোনো সিনিয়র-জুনিয়র নেই।’
ইত্তেফাক/বিএএফ