বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শঙ্কা পেছনে ফেলে কক্ষপথে শিক্ষা কার্যক্রম

আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:০৫

শঙ্কাকে পেছনে ফেলে কক্ষপথে ফিরে এসেছে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম। অনেক দেশ এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। সেখানে বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। 

নম্বর-বিষয়-সিলেবাস সংকুচিত করে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে হয়তো আগামী মার্চ মাসের পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পাঠদান শুরু হবে।

কোভিড-১৯ মহামারি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এই ভাইরাসে বিধ্বস্ত হয়। করোনা এমনভাবে জীবনকে থামিয়ে দিয়েছিল, যা শতবর্ষে ঘটেনি। ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৬ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। ছবি: আব্দুল গনি

ওই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হওয়ায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পিএসসি, জেএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেওয়া হয়। যদিও করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত বছরের এপ্রিল থেকেই টেলিভিশনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ক্লাস প্রচার শুরু হয়। এরপর বড় স্কুল-কলেজগুলো এবং পরে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও অনলাইনে ক্লাস শুরু করে। 

কিন্তু মফস্বল এবং দরিদ্র পরিবারে ডিভাইস ও ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় সব শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারেনি। ফলে বড় ধরনের শিখন ঘাটতি তৈরি হয়। এ অবস্থায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি ওঠে। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্য ছিল এক ধরনের উচ্ছ্বাস।

স্কুল খোলার আগে পরিষ্কার-পরিছন্ন করা হয়। ছবি: আব্দুল গনি

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ১৪ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতি বিভাগে তিনটি বিষয়ের (নৈর্ব্যক্তিক) ওপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে ২ ডিসেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়।

এ বছর সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এজন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। ইতিমধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয় এসএসসি পরীক্ষা। ছবি: আব্দুল গনি

এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন পরিস্থিতি আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত মনিটরিং করা হবে। সেটি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামী মার্চ মাসের পর স্বাভাবিক পাঠদান শুরু হবে। এর আগ পর্যন্ত বর্তমান নিয়মে ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হবে।

করোনা মহামারিতে বিশ্বের উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত সব দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি বিশ্বকে বেশ কিছুদিন বহন করতে হবে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা খাত।

ইত্তেফাক/এএএম