পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির আবেদন করার পর পরীক্ষার সবকটি ধাপে উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি পাচ্ছেন না সাভারের হাসান সিদ্দিকী। পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জামা-জুতা-কেডসের সাইজ জানতে চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ফোন করা হয়। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে উত্তীর্ণ হওয়া অন্য বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারেন, প্রশিক্ষণের জন্য ডাক পাওয়া সবার কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে।
গেল বছরের বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সবার সঙ্গে তিনিও হাজির হন পুলিশ কেন্দ্রীয় মিল ব্যারাক হাসপাতালে। কিন্তু বাকি সবাইকে রাজারবাগ পুলিশ কেন্দ্রীয় হাসপাতালে পাঠানো হলেও তাকে পাঠানো হয়নি। এ সময় হাসান তাকে না পাঠানোর কারণ জানতে চান দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে। পরে হাসানকে রিজার্ভ অফিসে ডেকে নিয়ে জানানো হয়, ভূমিহীন হওয়ায় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বিনোদবাইদ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন হাসান। ২০১৯ সালে সাভার মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ধামরাই সরকারি কলেজে ভর্তি হন। দুই ভাইয়ের মধ্যে হাসান বড়। তার বাবা ওমর সিদ্দিকী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিত্রগ্রাহকের কাজ করে কোনোমতে সংসার চালান।
হাসান বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে অনলাইনে আবেদন করেছিলাম। যোগ্যতা অনুযায়ী সব ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য সাভার মডেল থানা পুলিশ, এনএসআই ও ডিএসবি আসে আমাদের বাড়িতে। তদন্তে আসার পর আমি তাদের ভূমিহীন হওয়ার কথা জানাই। পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স থেকে কল দিয়ে ট্র্যাক স্যুট, জুতার মাপ ও জামা, ট্রাউজার, কেডসের সাইজও নেওয়া হয়। এরপর থেকে পুলিশে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু শুধুমাত্র ভূমিহীন হওয়ায় আমার পুলিশে চাকরির স্বপ্নটা ভেস্তে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার সাংবাদিকদের বলেন, ভূমিহীন হলে সার্টিফিকেট দিলে আমরা নিয়ে নিচ্ছি। চাকরি না হওয়ার সুযোগ নেই। যারা সনদ জমা দিয়েছে, এরকম ৩ জনকে আমরা নিয়োগ দিয়েছি। ইউএনও কার্যালয় বা ভূমি কার্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র দিতে হবে যে, সে ভূমিহীন। এমন সনদ পেলেই আমরা নিয়োগ দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আগামী ৩ মাস পর ফের নিয়োগ হবে। তখন বিষয়টি দেখা হবে।