বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে বরিস?  

আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৪১

মদের পার্টিতে যোগদানের বিষয় স্বীকার করে গতকাল বুধবার পার্লামেন্টে ক্ষমা চেয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে তার দলের সিনিয়র এক নেতা ও বিরোধীরা বলছেন, বরিসের পদত্যাগ করা উচিৎ। 

দেশজুড়ে প্রথম লকডাউন চলাকালীন সময় ২০২০ সালের মে মাসে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টিতে যোগদানের ব্যাপার স্বীকার করে বরিস বলেন, আমি জনগণের ক্ষোভ বুঝতে পেরেছি। 

বুধবার পার্লামেন্টে বরিস বলেন, আমি বুঝি আমার নেতৃত্বের সরকারকে নিয়ে তারা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ, কেননা তারা ভাবছে যখন ডাউনিং স্ট্রিটে নিয়মগুলো যারা তৈরি করে তারাই তা সঠিকভাবে মানছে না। 

তিনি এ সময় আরো বলেছেন, আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। এছাড়া বরিস তার এমন কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত বলে জানান। একই সঙ্গে ওই মদের পার্টি  কাজের অংশ ছিল বলে তিনি ভেবেছিলেন। বরিসের এই মন্তব্যে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে হাসি ও ঠাট্টার রোল ওঠে। 

জনসন গতকাল আরো বলেন, আমি ২০২০ সালের ২০ মে একদল স্টাফকে ধন্যবাদ দিতে পার্টিতে গেছিলাম। এরপর ২৫ মিনিট পর কার্যালয়ে কাজে ফিরে যাই। আমার উচিৎ ছিল সবাইকে ভেতরে পাঠানো। 

দেশটির প্রধান বিরোধী দলগুলো বরিসের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের কনজারভেটিভ দলের প্রথম কেউ বরিসের পদত্যাগ চেয়েছেন।  

লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমার বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনকে বের করে নিবেন এমন অঙ্গীকারের পর জনগণ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে জনসনকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন। তবে এখন জনগণ মনে করেন তিনি একজন মিথ্যাবাদী। 

২০২০ সালে বরিস জনসন লকডাউন ভেঙ্গে যে পার্টি করেছেন সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক মেইলে এই তথ্য জানা গেছে। বৃটিশ আইটিভি এই মেইল প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই পার্টিতে অন্তত ১০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে সে দিন প্রায় ৪০ জন অংশ নেন। যাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং তার স্ত্রী ক্যারি সিমন্ডসও উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালের ২০ মে আয়োজন করা হয় ওই পার্টির। সে সময় দেশটিতে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করা নিষিদ্ধ ছিল। 

আইটিভির খবর, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল প্রাইভেট সেক্রেটারি মার্টিন রেনল্ডস ডাউনিং স্ট্রিটের ওই পার্টিতে অংশ নিতে ১০০ এর বেশি জনকে মেইল করেন। এসবের মধ্যে রয়েছেন বরিসের উপদেষ্টা, বক্তৃতা লেখক এবং দরজার স্টাফ। 

তবে বরিসের প্রেস সেক্রেটারি বলেছেন বরিস এই মেইল দেখেননি। 

কনজারভেটিভ দলের বেশকিছু আইনপ্রণেতা বলেছেন, বুধবারের বরিসের এই বিষয়ে সাড়ার পর তার প্রতি যে ক্ষোভ তা তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। 

দুইবছর আগেও বরিসের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিল কিন্তু তার নেওয়া ভুলপদক্ষেপসহ সর্বশেষ মেইল ফাঁসের পর তার অবস্থান এখন নড়বড়ে পর্যায়ে। গত মঙ্গলবার দুইটি স্ন্যাপ ওপিনিয়ন পোলে অর্ধেকের বেশি মতামতকারী জানিয়েছেন বরিসের পদত্যাগ করা উচিৎ। তথ্যসূত্র: রয়টার্স  

ইত্তেফাক/এসআর