দুই দুইটি রেকর্ড গড়ে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখালেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ছেলে নাফিস ইসতে তৌফিক ওরফে অন্তু। হাতের স্পর্শ ছাড়াই কলা খেয়ে ও দ্রুততম সময়ে ১০টি মাস্ক পরে ২০২১ সালের গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখান তিনি। নাফিস নীলফামারীর সৈয়দপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার এই অর্জনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, সহপাঠী ও অভিভাবক বেজায় খুশি।
নাফিস যুক্তরাষ্ট্রের জজ পিলের সাত দশমিক ৩৫ সেকেন্ডের রেকর্ড ভেঙে মাত্র সাত দশমিক ১৬ সেকেন্ডে পরেন ১০টি সার্জিক্যাল মাস্ক। এর পাশাপাশি হাতের ব্যবহার ছাড়াই মুখ দিয়ে কলা ছিলে ৩০ দশমিক সাত সেকেন্ডে তা খেয়ে কানাডার মাইক জ্যাকের ৩৭ দশমিক সাত সেকেন্ডের রেকর্ড ভেঙে দেন। তার এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ গত বছর বিশ্ব রেকর্ডের সনদ দিয়েছে নাফিসকে।
নাফিসের পরিবার বসবাস করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। তার বাবা ইউনূস আলী একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেন। নাফিসের বাবা ইউনূস আলী বলেন, বিশ্বাস করতে পারছি না, আমার ছেলে এত বিশাল সাফল্য বয়ে আনবে। তার মা নাজমুন নাহার বলেন, নাফিস সারাক্ষণ যন্ত্রপাতি নিয়ে মেতে থাকেন। সে ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হতে চায়। অথচ ব্যতিক্রম দুটি বিষয়ে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে তা ভেবে অবাক হচ্ছি। তিনি ছেলের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
নাফিস ইসতে তৌফিক ওরফে অন্তু জানান, গত বছরের ১৩ এপ্রিল গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আবেদন করেন তিনি। ৪ মে গিনেজ কর্তৃপক্ষ অন্তুর আবেদন গ্রহণ করে ১০টি সার্জিক্যাল মাস্ক দ্রুততম সময়ে পরার অনুমতি দেয়। অবশেষে ১৪ জুলাই দীর্ঘদিনের পরিশ্রম সফল হয়েছে।
ছোট থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে খেলার আগ্রহ নাফিসের। টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে তিনি বিভিন্ন ডিভাইস ও যন্ত্রপাতি কেনেন। করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে সারাক্ষণ বন্দি থাকতে হয়েছে তাকে। নাফিস স্ট্যাপলারের পিন দিয়ে দীর্ঘ চেইন বানিয়ে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়তে চেয়েছিল। কাজটি শুরুও করেছিল, কিন্তু করোনাকালে নানা প্রতিকূলতার কারণে উপকরণ সংগ্রহে ব্যর্থ হয় নাফিস।
সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল সরকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০২১ সালে আমার প্রতিষ্ঠানের ছাত্র নাফিস গিনেজ বুকে নাম লিখিয়েছে। যা আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য এটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, কেবল ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়া নয়, ভালোভাবে লেখাপড়া করে ভালো মানুষ হবে আমাদের নাফিস। নাফিসের কৃতিত্বের ছবি প্রতিষ্ঠানের প্রদর্শনী বোর্ডে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।