করোনার প্রকোপ কিছুটা কম হওয়ার পর নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হয়েছে। এতে নির্মাণ শিল্পের অন্যতম প্রধান উপকরণ রডের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যায়। গত বছরের নভেম্বরে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছায় রড। তখন ভালো মানের বা ৬০ গ্রেডের ওপরে এক টন রড খুচরা পর্যায়ে ৮১ হাজার টাকার ওপরে উঠে যায়। এরপর রডের দাম কিছুটা কমলেও গেল এক সপ্তাহে প্রতি টন রডের দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর ওয়েবসাইট অর্থাৎ সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, ভালো মানের (৬০ গ্রেড) এক টন রডের দাম ৮১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম স্পর্শ করার পর সাড়ে ৮১ হাজার টাকা থেকে কমে চলতি বছরের শুরুর দিকে ৭৬ হাজার টাকায় চলে আসে। এক বছর আগে একই মানের রডের টনপ্রতি বিক্রিমূল্য ৬৫ হাজার থেকে ৬৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। অর্থাত্ গত এক বছরে এ পণ্যের দাম ১৮ শতাংশ বেড়েছে। আর ৪০ গ্রেডের এমএস রডের দাম গতকাল ছিল ৬৯ হাজার টাকা থেকে ৭৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত বছরের একই দিনে এ মূল্য ছিল ৫৬ হাজার টাকা থেকে ৬৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রেও দাম প্রায় সাড়ে ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
এর আগে ২০০৭ সালের শেষ ও ২০০৮ সালের প্রথম দিকে প্রতি টন রডের দাম সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকায় উঠেছিল। রডের এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে স্ক্র্যাপের দাম বেড়েছে ২ হাজার টাকার ওপরে। সেই সঙ্গে রডের চাহিদাও কিছুটা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বেড়েছে রডের দাম।
অবকাঠামো উন্নয়নের প্রধান উপকরণের অন্যতম হলো রড। এ নির্মাণ উপকরণের চাহিদা সামনে বাড়বে। পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণ বঙ্গের ২১টি জেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হবে। এই ২১টি জেলায় শিল্পকারখানা, বাণিজ্যিক ভবনের মতো অবকাঠামো তৈরি হবে। ঢাকার ছোট-বড় শিল্পকারখানা স্থানান্তর হবে। নতুন কারখানা হবে। আবার কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে অবকাঠামো উন্নয়নে গতি বাড়বে। এতে অবকাঠামো নির্মাণের প্রধান উপকরণ রড ও সিমেন্টের চাহিদা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।