রোববার, ১১ জুন ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ : সজীব ওয়াজেদ জয়

আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ২৩:৫৭

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। এজন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে এখন কথা বলার সময় এসেছে। কারণ দ্রুত বদলে যাওয়া প্রযুক্তি মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনছে। অর্থনীতির বিকাশ ও শিল্পায়নও দ্রুত ঘটছে।’ তিনি বলেন, ‘নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও প্রকৌশলীদের জন্য আগামী ভবিষ্যত্ হবে এবং এজন্য নতুন প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।  দেশে বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা রয়েছে আইটি শিক্ষা প্রাইমারি লেবেল থেকে শুরু করার।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের দ্বিতীয় দিন আয়োজিত মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধও উপস্থাপন করেন তিনি। এসময় সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমকে সামনে রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকে আইটি শিক্ষা শুরু করা কঠিন হবে না। এ লেবেলে শুধুমাত্র লেখা শেখানো বা তাদের হোমওয়ার্ক ট্যাবের মাধ্যমে করা ইত্যাদি করা যেতে পারে। শিশুরা এগুলো খুব দ্রুত শেখে। তবে এখানে আমাদের রিসোর্স একটি চ্যালেঞ্জ, স্বল্পমূল্যে ট্যাবলেট ও কম্পিউটার দেশে তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি কয়েক বছরের মধ্যে প্রাথমিক থেকে এ শিক্ষা শুরু করা যাবে।’

২০০৮ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হওয়ার পর বর্তমানে দেশের ৪০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড হয়েছে জানিয়ে জয় বলেন, আগামীতে বেশিরভাগ সেবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হবে। ভবিষ্যতে ৮০ শতাংশ সরকারি সেবা স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা হবে। আগামীতে ১০ শতাংশের বেশি গাড়ি চালকহীন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার, ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের জীবনেও এর প্রভাব দেখা যাবে। আগামীর বাংলাদেশ পৃথিবীর এসব উন্নত প্রযুক্তিগুলোকে গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই ন্যানো ম্যাটেরিয়ালের বাণিজ্যিক ব্যবহার দেখা যাবে। এসব ন্যানো ম্যাটেরিয়াল স্টিলের চেয়েও ২০০ গুণ শক্ত, কিন্তু চুলের চেয়েও পাতলা। আমাদের দেশে থ্রিডি প্রিন্টেড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টও হবে।

তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে কাজ করেছে। জনগণ তথ্যপ্রযুক্তির সুফলও ভোগ করছে। ফলে বাংলাদেশে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ। এই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডেই আপনারা দেখেছেন ড্রোন, বিশ্বের উন্নত রোবট সোফিয়াকে। ভবিষ্যতে  মোবাইল সুপার কম্পিউটিং, চালকবিহীন গাড়ি, কৃত্রিম বুদ্ধিমান রোবট, নিউরো প্রযুক্তির ব্রেন, জেনেটিক এডিটিং দেখা যাবে।’ আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের জন্য উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ ভবিষ্যতে একটি ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে পাঁচ দেশের মন্ত্রীসহ ৭ দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এতে বাংলাদেশ থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডায়োডোনি কালোম্বো, কম্বোডিয়ার ডাক ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী কান চানমেটা বক্তব্য রাখেন। এছাড়া কনফারেন্সে  অংশ নেন ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী দিনা নাথ ডঙ্গায়েল, মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী থরিক আলী লুথুফি, ফিলিপাইনের আইসিটি অধিদপ্তরের পরিচালক নেস্টর এস বোঙ্গাটা, সৌদি আরবের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান ও মন্ত্রীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাহাদ আলীআরাল্লাহ।

ইত্তেফাক/নূহু