মহামারির কারণে কানাডায় দেওয়া বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে দেড় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করছেন ট্রাকচালকরা। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভের মুখে দেশটির রাজধানী অটোয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এই আন্দোলন এখন কানাডার অন্যান্য প্রদেশের শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন বলেন, শহরটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। চলমান বিক্ষোভ এখানের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কানাডার ট্রাকচালকরা তাদের এই বিক্ষোভের নাম দিয়েছেন ‘ফ্রিডম কনভয়’। টিকা বাধ্যতামূলক করা ও বিধিনিষেধের প্রতিবাদ জানাতে তারা দেশটির নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ট্রাক নিয়ে অটোয়ায় আসেন। কানাডার পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশের রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। ফলে অটোয়ার কেন্দ্রস্থল অচল হয়ে যায়।
বিক্ষোভে হাজার হাজার ট্রাক নিয়ে অংশ নেন চালকরা। তারা প্রতিবাদে হর্ন বাজাতে থাকেন অনবরত। ফলে অটোয়া এক প্রচণ্ড কোলাহলের শহরে পরিণত হয়েছে।
এর আগে ১৫ জানুয়ারি ট্রাকচালকদের জন্য নতুন বিধিনিষেধ জারি করে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। তার মধ্যে একটি হলো- যেসব ট্রাকচালক করোনাভাইরাসের টিকা নেননি, তারা সীমান্ত পথে যুক্তরাষ্ট্রে আসা-যাওয়া করলে, ফেরার পর তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এরপরই বিক্ষোভে নামেন ট্রাকচালকরা।
মহামারি করোনাভাইরাস রোধে দেওয়া সরকারের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন কানাডার ট্রাকচালকরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সংসদে দেওয়া বক্তব্যে তিনি করোনা রুখতে দেওয়া বিধিনিষেধের পক্ষেও যুক্তি তুলে ধরেন।
অটোয়ার পুলিশ এরইমধ্যে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের চাকরিচ্যুত করার কথাও বলেছে প্রশাসন। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে।
রাজধানী অটোয়া ও যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাকচালকরা। স্থানীয় সময় সোমবার সংসদে ট্রুডো বলেন, ‘সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া, অবৈধ বিক্ষোভ; অগ্রহণযোগ্য। এতে ব্যবসা ও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিক্ষোভ বন্ধে আমাদের সবকিছু করতে হবে। বিক্ষোভকারীরা আমাদের অর্থনীতি, গণতন্ত্র, নাগরিকদের জীবযাপনকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
খবরে প্রকাশ, এই আন্দোলন-বিক্ষোভের উসকানি এবং অর্থ মদদ দিচ্ছে মার্কিন সাবেক প্রেসিডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা কানাডার আভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের কারণে কানাডায় দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।