দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চেইন ধরে রাখতে মোংলা সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব বেড়েই চলছে। নতুন বছরের শুরুতে বন্দরে কন্টেইনারে পণ্য আমদানি বেড়েছে। বর্তমানে সমগ্র দেশের মোট আমদানির ৭ ভাগ মোংলা বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকলেও অচিরেই তা ১৫ ভাগ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। কন্টেইনারবাহী জাহাজ বেশি আগমন করার কারণে বন্দরের আয় আগের তুলনায় বেড়েছে।
জানা গেছে, মোংলা বন্দরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ক্রেন বিহীন পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এমভি ফিলোটিমো গত ৬ ফেব্রুয়ারি বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে ভিড়ে। ১৭২ মিটার দৈর্ঘ্য এ জাহাজটি থেকে ৪৮৬ টিইউজ কন্টেইনার খালাস করা হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ওই একই জাহাজ ৪৩৮ টিইউজ কন্টেইনার নিয়ে বন্দরে আসে এবং একইদিনে কন্টেইনার পণ্য খালাস শুরু। চলতি মাসে গিয়ারলেজ জাহাজ থেকেই ৯২৪ টিইউজ কন্টেইনার খালাস করা হয় যা বন্দর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে নতুন রেকর্ড।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন জানান, বন্দরের নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি ২টি মাল্টিপারপাস ক্রেন ও ৪টি মোবাইল হারবার ক্রেন সংযোজন করা হয়েছে। এই অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস ও মোবাইল হারবার ক্রেনের মাধ্যমেই গিয়ারলেজ জাহাজ থেকে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য সহজেই বোঝাই খালাস সম্ভব হয়েছে। এখন থেকে গিয়ারলেস জাহাজ আসলেও তার যথাযথ সেবা প্রদানে বন্দর কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আগে একটি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বোঝাই করতে সেখানে ৩দিন লাগত এখন সেখানে দুই দিনেই পণ্য খালাস বোঝাই সম্ভব হচ্ছে। এটা অবশ্যই বর্তমান সরকারের একটি বড় অর্জন।
এবিষয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, “ইতিমধ্যে আমরা চারটি মোবাইল হারবার ক্রেন সংগ্রহ করেছি। বন্দরে গিয়ারলেস জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে এবং বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সে লক্ষ্যমাত্রার দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং কার্গো হ্যান্ডলিং এর লক্ষ্যমাত্রা চার মাসে অর্ধেকের বেশি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। গিয়ারলেস জাহাজ আমাদের বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতাকে আরও বৃদ্ধি করেছে। এ বছরের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন, সরকারের এই পদক্ষেপের সাথে মেগা প্রজেক্ট উদ্বোধনের পর মোংলা বন্দরের কার্যকরী ভূমিকা আরও দৃশ্যমান হবে।