মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

২০২৩ সালের বইমেলার পরিকল্পনা করতে হবে এখন থেকেই

আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১২:২৬

কথায় নয় কাজেও আমরা বারবার প্রমাণ দিয়েছি ‘অমর একুশে বইমেলা’ আমাদের প্রাণের মেলা। গত দশকে সফলতার এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছিল ২০১৮ ও ২০১৯-এর ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। ২০২০-এ বর্হিবিশ্বে করোনার প্রকোপকালে ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সরাসরি না হলেও মানসিকভাবে কিছুটা প্রভাব বইমেলার উপর ছিলো তা অস্বীকার করা যাবে না।

২০২১ সালে কিছুটা পরিবর্তন এনে ‘অমর একুশে বইমেলা’ নামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হল। নামই শুধু নয় ‘করোনা’র কারণে সব কিছুতেই পরিবর্তন আনা হলো। চিরাচরিত নিয়মের বাইরে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ মেলার সময়কাল নির্ধারণ হলো। প্রকাশকরা ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সব কিছুই মেনে নিলেন। কিন্তু ফলাফল- একটি অসফল বইমেলার প্রথম বছর দেখতে হলো সবাইকে।

২০২২-এর বইমেলা এক সময় অনিশ্চিত হয়ে যায়। তখন আমাদের মূল লক্ষ ছিল বইমেলা আয়োজন। হয়ত বইমেলা সফল হবে না কিন্তু সব ত্যাগ স্বীকার করেও বইমেলাকে মাঠে নিয়ে আসতে হবে এর ঐতিহ্য এবং ধারাবাহিকতা রক্ষায়। এই লক্ষে আমাদের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এগিয়ে এসেছেন সংস্কৃতি বিষয় প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালিদ। প্রকাশকদের আর্থিক সংকট বিবেচনায় নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে বলেছেন, প্রকাশকদের অর্ধেক ভাড়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে।

আমাদের সবচেয়ে বড় সন্তুষ্টির বিষয় হচ্ছে- বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাসেই শুরু হয়েছিল। এক সময় উভয়পক্ষের সম্মতিতে বইমেলা ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা আসে। সে অনুসারে বইমেলা চলছে। মার্চের বইমেলায় পাঠক-ক্রেতা অভ্যস্ত নয়। তারপরও মাঠ ফাঁকা যাচ্ছে না। বইমেলা আয়োজক এবং প্রকাশকদের স্বস্তির জায়গা এটি।

তবে যে বইমেলা আমাদের প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করতে পেরেছিল, যে বইমেলা অন্য দেশের বইমেলা আয়োজকদের জন্য ঈর্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যে বইমেলা প্রকাশকদের সারা বছরের খোরাক জোগানোর স্থান হয়েছিল। সেই বইমেলা আমাদের সামনেই বিবর্ণ রূপ পাবে- এটা আমাদের কারোরই কাম্য নয় নিশ্চয়।

তাই এখন থেকেই আমাদের ভাবতে হবে, সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে পরবর্তী বইমেলা আয়োজনের। একটি সুপরিকল্পিত, সুচিন্তিত ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৩’ আয়োজন করতে চাই আমরা। আমাদের সংস্কৃতির প্রধান উৎসব, ঐতিহ্যের ধারক এই বইমেলাকে সফল ও সুন্দর রূপ দেওয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। প্রয়োজনে ঢেলে সাজাতে হবে, পুনর্বিবন্যাস করতে হবে মূল নকশা, অংশগ্রহণের নিয়মাবলী এবং স্থান বন্টনের পদ্ধতি।

‘অমর একুশে বইমেলা’ আমাদের প্রাণের মেলার ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাই নিজেদের সবটুকু আন্তরিকতা দিয়ে।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি

 

ইত্তেফাক/এসজেড